মাশরুমের চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী এ্যানিমং মারমা

fec-image

অত্যন্ত সুস্বাধু ও পুষ্টিকর খাবার মাশরুম। বিভিন্ন রোগের পথ্য হিসেবে মাশরুম সবজি আকারে রান্না করে খাওয়া যায়। উন্নত মানের রেস্টুরেন্টে নানান ধরনের মাশরুমের রেসিপি তৈরী করা হয়, যার কদর অনেকাংশে বেড়েছে।

পলি ব্যাগে কাঠের গুড়া, ধানের কুড়া, গমের ভূষি ইত্যাদির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে পরিচ্ছন্ন উপায়ে একটি মাশরুমের অংশ হতে টিস্যু সংগ্রহ করে চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন এ্যানিমং মারমা।

বান্দরবান সদরের চেমী ডলুপাড়ার বাসিন্দা এ্যানিমং। একজন শিক্ষিত যুবক হয়ে দীর্ঘ অনেক বৎসর বেকারত্বের সময়কালে মাশরুম উৎপাদন করতেন এ্যানিমং।

মাশরুম উৎপাদনের জন্য ঢাকা থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হতো। বীজ আনা নেওয়ার সময় অনেক বীজ তার সক্ষমতা হারিয়ে ফেললে তা নষ্ট হয়ে যেত। অনেক সময় তিনি বীজ কিনতে চাইলেও ঢাকার বীজ উৎপাদনকারীরা বীজ সরবরাহ দিতে পারছিল না।

এবার তিনি নিজেই চারা উৎপাদন করেছেন এবং তাতে মাশরুম উৎপাদিত হচ্ছে। শুরুতেই সফলতা পেয়েছিলেন এ্যানিমং। বিগত বছরের বন্যায় তার মাশরুম চাষের ঘরটি বন্যায় নষ্ট হয়ে যায়। লক্ষাধিক টাকার মাশরুম চারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

তারপরও তিনি আশা ছাড়েন নি। এবছর আবহাওয়া ভাল থাকায় আবারো সফলতার দ্বারে পৌছেছেন।

মাশরুম চাষের জন্য সরকারী সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্যে দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন অনেকদিন। ৩ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে ২০১৮ সালে পরীক্ষামূলকভাবে মাশরুম উৎপাদন শুরু করেন এ্যানি মং।

এবার তার নিবেদনে সাড়া দিয়ে অর্থায়ন করেছেন এনজিও হেলেন কেলার নামক প্রতিষ্ঠান। তাকে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম উৎপাদনের জন্য স্থানীয় এনজিও তহজিংডং ও গ্রাউস নামের দুটি প্রতিষ্ঠানই তত্ত্বাবধান করে যাচ্ছেন নিয়মিত।

মাশরুমের টিস্যু হতে চারা উৎপাদন করে প্রতিটি চারা ৫০ টাকায় বিক্রয়ও করেন। প্রতিটি চারা হতে ২৫০ গ্রাম ওজনের মাশরুম উৎপাদন করা সম্ভব। যা কেজিতে বিভিন্ন মৌসুমে ৪’শ থেকে ৮শত টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করা সম্ভব হয়।

এবার তার পক্ষে ২ হাজার বীজ সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে। মাশরুম চাষে তার প্রতি মাসে ১ লক্ষ টাকা আয় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

তিনি হেলেন কেলার, তহজিংডং ও গ্রাউস এর সমন্বয়ে বান্দরবানের লামা উপজেলায় শিক্ষিত বেকার যুবকদের মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন। বান্দরবানের পশ্চিম বালাঘাটা তুলা উন্নয়ন বোর্ডের পাশে তার নিজ বসতবাড়ীতে এ মাশরুম চাষ করে থাকেন।

স্বল্প জায়গায় পরিচ্ছন্ন উপায়ে অধিক মাশরুম উৎপাদন করা সম্ভব। যা জীবিকা নির্বাহের সহজ পন্থা মনে করা হয়। অনেক বেকারও এই মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব বলে মনে করেন এ্যানিমং।

আগামীতে মাশরুম চাষটি আরও বড় পরিসরে করার পরিকল্পনা আছে বলে জানান।

মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি মাশরুম চাষে ব্যাপক সফলতার মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করবেন বলে আশা করছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন