parbattanews

মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে সাত বছরের শিশু নিহত

ফাইল ছবি

নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মিয়ানমারে ৭ বছর বয়সী এক কন্যা শিশু নিহত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত মাসের সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে জানা-শোনার মধ্যে এটিই সবচেয়ে কম বয়সী ভুক্তভোগী।

সে তার বাড়ি মান্দালয় শহরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নিহত মেয়েটির পরিবার। পহেলা ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকেই বিক্ষোভ চলছে মিয়ানমারে।

সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, এ পর্যন্ত প্রায় ২০ জন শিশু প্রাণ হারিয়েছে। সামরিক বাহিনী বলছে, বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ১৬৪ জন নিহত হয়েছে। তবে অধিকার রক্ষা গ্রুপ অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস-এএপিপি এর দাবি, নিহতের সংখ্যা প্রায় ২৬১ জন।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) বিক্ষোভাকারীদের মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। তবে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য তারা বিক্ষোভকারীদেরকেই দায়ী করেছে।

মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, সহিসংতা এবং অগ্নিকাণ্ডের পেছনে মূলত সেনা অভ্যুত্থান-বিরোধী বিক্ষোভই দায়ী।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে মান্দালয়ের শেষকৃত্য সেবা সংস্থার এক কর্মী জানিয়েছেন যে, সাত বছর বয়সী ওই শিশুটি বুলেটের আঘাতের কারণে মারা গেছে।

মিয়ানমার নাউ তাদের প্রতিবেদনে বলছে যে, সেনারা তার বাবাকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়ে। কিন্তু সেটি তার পরিবর্তে ওই শিশুটিকে আঘাত করে। কারণ বাড়ির ভেতরে বাবার কোলে বসে ছিল শিশুটি। ৭ বছর বয়সী ঐ নিহত শিশুটির নাম খিন মিও চিত।

ত্রাণকর্মীরা বলছেন, উদ্ধারকারী দল তাকে দ্রুত চিকিৎসা সেবার আওতায় নিয়ে এলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচাতে পারেননি। পরিবারের সদস্যরা বলছে তার ১৯ বছর বয়সী ভাইকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি সামরিক বাহিনী।

সেভ দ্য চিলড্রেন এক বিবৃতিতে বলেছে, ওই মেয়েটির মৃত্যুতে তারা “আতঙ্কিত”। এই ঘটনাটি মান্দালয়ে ১৪ বছর বয়সী আরেক শিশু মারা যাওয়ার পর দিনই ঘটলো।

গ্রুপটি বলছে, “এই দুটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক কারণ নিহত হওয়ার সময় তারা বাড়িতেই ছিল যেখানে তাদের অন্তত সুরক্ষিত থাকার কথা। আসল বিষয়টি হচ্ছে যে, প্রায় প্রতিদিনই এতো শিশু মারা যাচ্ছে যে, বোঝা যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর আসলে মানুষের জীবনের প্রতি কোন সম্মান নেই।”

মিয়ানমার সম্পর্কে কিছু তথ্য
•১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পায় মিয়ানমার। আধুনিক ইতিহাসের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে জান্তা শাসনে।

•২০১০ সালের পর থেকে নিধি-নিষেধ কমতে থাকে, যার জের ধরে ২০১৫ সালে একটি মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এর পরের বছর বিরোধী নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্ব সরকার গঠিত হয়।

•২০১৭ সালে পুলিশের উপর রোহিঙ্গা জঙ্গিদের হামলার জবাবে অভিযান শুরু করে সামরিক বাহিনী। যার কারণে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এই ঘটনাকে জাতিসংঘ “জাতিগত নির্মূলের পাঠ্যবইয়ের উদাহরণ” বলে উল্লেখ করে।

Exit mobile version