parbattanews

নাগরিকত্ব ও ধর্মীয় স্বাধীনতাসহ মিয়ানমারেই ফিরতে চায় রোহিঙ্গারা

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা

ভাসানচর কিংবা ঠেঙ্গার চর নয়, নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারেই ফেরত যেতে চান এই বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এমনটাই জানা যায়, তাদের সাথে কথা বলে। কিন্তু এই কথার পেছনে রয়েছে তাদের বিরাট শর্ত। বাক স্বাধীনতা ফিরে পেতে চান তারা। দেশের অন্যান্য নাগরিকদের মত তারা মিয়ানমারে বসবাস করতে চান। এমনটাই দাবী তাদের।

ভাসানচরে কেন যেতে রাজি নন রোহিঙ্গারা- এমন প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গা নেতা (হেড মাঝি ক্যাম্প১১) নুর হাসেম পার্বত্যনিউজকে বলেন,” শুনেছি সেখানে সাগর পথে যেতে হয়। আর আমাদের সাগরপথে ভয় রয়েছে এবং সেখানে বসবাস করতেও ভয় ডর রয়েছে। সমুদ্রপানিতে ডুবে যাওয়ার ভয়ও আমাদের কাজ করে। তাই আমরা কোনো এলাকায় যেতে চাই না। ওখানে গিয়ে আরো বিপদগ্রস্ত হতে চাই না। মনে হচ্ছে, এখন যেখানেই আছি ভালই আছি।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা আমাদের দেশেই ফিরে যেতে চাই সব সময়। কিন্তু আমাদের সহায়-সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে হবে মিয়ানমার সরকারকে। বাড়িঘর পুনঃনির্মাণ না করলেও আমাদের ভূমি ফিরিয়ে দিতে হবে কড়ায় গণ্ডায় গুণে।”

রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৩ এর আরেক রোহিঙ্গা (নাপিত) হাকিম পার্বত্যনিউজকে বলেন, “আমরা আপাতত এখানেই থাকবো, না হয় এখান থেকে নিজের দেশে চলে যাওয়ার উপায় খুঁজবো। এখন এটাই সবার কথা। আমাদের ভাল জায়গায় নিয়ে গেলে আমরা যেতে রাজী আছি। কিন্তু ঠেঙ্গার চরে যেতে রাজী নই আমরা।”

কোন শর্তে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে প্রস্তুত রোহিঙ্গারা এমন প্রশ্নের উত্তরে আরেক রোহিঙ্গা নেতা মোঃ ইউনুস পার্বত্যনিউজকে বলেন,”প্রথমত আমরা মুসলিম জনগোষ্ঠী। আমরা যখনই নিজের দেশে ফেরত যাওয়ার কথা ভাবি ঠিক তখনই একটা বাধা কাজ করে মনে। কয়েকটি শর্তানুযায়ী ফেরত যেতে প্রস্তুত আমরা। আমাদের দাবি নতুন বাড়িঘর না। এমনকি জায়গা সম্পত্তিরও ব্যাপার নয় মূলত। আমাদের চাওয়া ধর্মীও স্বাধীনতা ও মিয়ানমারের নাগরিকত্ব লাভই আমাদের সকলের চাওয়া।”

তিনি আরো বলেন,”আমরা সেদেশের রাখাইনদের মতো স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই, মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। মিয়ানমারের ধর্মীয় অনুশাসনে আমাদের ধর্মকেও গুরুত্বারোপ করতে হবে। আমরা স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করতে পরিনি সেদেশে। আমরা যে মিয়ানমারের নাগরিক সেটার স্বীকৃতি চাই।”

দেশে ফেরার বিষয়ে বেশিরভাগ রোহিঙ্গাই উপরোল্লিখিত কথাগুলো বলেছেন। তাদের আচরণে বোঝা যায় তারা বর্তমানে যেখানে অবস্থান করছেন সেখানে আরামদায়ক অবস্থায় রয়েছেন।

উল্লেখ্য, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া প্রায় এক লক্ষ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের আগাম প্রস্তুতিসহ বেড়িবাধ নির্মাণ, ঘরবাড়ি, সাইক্লোন শেল্টারসহ অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ প্রায় শেষ করা হলেও সেখানে যেতে একেবারেই প্রস্তুত নন তারা।

Exit mobile version