parbattanews

মিয়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনী বান্দরবান সীমান্তে বসাচ্ছে স্থল মাইন


নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:

আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বান্দরবান সীমান্তের জিরো পয়েন্টে তার কাঁটার বেড়া সংলগ্ন মাইলের পর মাইল শত শত স্থল মাইন পুতে রাখছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে অনুপ্রবেশের সময় সীমান্তে পুঁতে রাখা মাইনের বিস্ফোরণে নিহত ও আহত হয়েছে বহু রোহিঙ্গা মুসলিম। বেঁচে যাওয়া অনেককে পঙ্গু বরণের আশঙ্কা রয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার আশারতলী সীমান্তে হাশেম উল্লাহর (৪২) মাইন বিষ্ফোরণে এক বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। তার বাড়ি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার আদর্শ গ্রামে।

স্থানীয়রা জানায়, সন্ধ্যার দিকে সীমান্তের ৪৪নং পিলারের কাছে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে গরু আনতে যান হাশেম উল্লাহ। এ সময় পুতে রাখা স্থল মাইন বিস্ফোরণে ঘটনা স্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় আহত রোহিঙ্গা আবদুল কাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা সদরে নিয়ে আসা হয়েছে। এপর্যন্ত মাইন বিষ্ফোরনে ছয়জন নিহত হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সরওয়ার কামাল জানান, দু’টি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় এক গরু ব্যবসায়ী নিহত ও এক রোহিঙ্গা আহত হয়েছে। আহত রোহিঙ্গাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদরে নিয়ে আসা হয়েছে।

এদিকে বান্দরবান জেলার নাইক্ষংছড়ি-আলীকদম উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তে প্রায় ৬৭ কিলোমিটার কাঁটা তারের বেড়া সংলগ্ন এলাকায় মাটির নিচে স্থল মাইন্ড পুতে রাখার কাজ অব্যাহত রেখেছে।

নব্বইয়েরর দশকে সীমান্ত এলাকায় মাইন পুঁতে রাখা হয়েছিল, কিন্তু সম্প্রতি মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর নিষিদ্ধ অ্যান্টি-পার্সোনাল মাইন পুঁতেছে বলে অভিযোগ তুলে বাংলাদেশি বিভিন্ন সূত্র এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো। যদিও মিয়ানমারের কর্মকর্তারা এই অভিযোগও অস্বীকার করেছেন।

ধারনা করা হচ্ছে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গীরা যাতে আবার মিয়ানমারে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য অ্যান্টি-পার্সোনাল মাইন পুতে রেখেছে। অ্যান্টি-পার্সোনাল মাইনের কারণে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষি বাহিনীর নানা সমস্যা পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানাগেছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গুলি ও স্থল মাইন বিস্ফোরণে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে নারী-শিশুসহ প্রায় একশ চিকিৎসাধীন রয়েছে।

বিজিবি ৩১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ারুল আজিম জানান, মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে সীমান্তের কাঁটাতার ঘেষে স্থলমাইন ও বিস্ফোরক পুতে রেখেছে। তার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি। এখনো কোন উত্তর পায়নি।

এদিকে নাফ নদিতে নৌকা ডুবে বুধবার আরো ৭ শিশুসহ মোট একশ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

Exit mobile version