parbattanews

মিয়ানমারে গণহত্যা মামলায় অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আইসিজের সিদ্ধান্ত ২৩ জানুয়ারি

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় দেশটির বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন কোন পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা এ বিষয়ে আগামী ২৩ জানুয়ারি সিদ্ধান্ত জানাবে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত (আইসিজে)।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) গাম্বিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক টুইটে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এ মামলা নিয়ে গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানিতে মিয়ানমার ও গাম্বিয়া উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনার এক মাসেরও বেশি দিন পর এই আদেশ আসছে।

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে গত ১১ নভেম্বর রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে গাম্বিয়া। মামলায় দেশটি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ১৯৮৪ সালের আন্তর্জাতিক জেনোসাইড কনভেনশন ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে।

জাতিসংঘের ১৯৫৬ সালের গণহত্যা সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে আইসিজের নির্দেশনা মানার বাধ্যবাধকতা রয়েছে মিয়ানমারের। এ আদেশ উপেক্ষা করলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকেও দেশটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় পক্ষে না গেলে মিয়ানমার বড় ধরনের চাপে পড়তে পারে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের নামে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। প্রাণে বেঁচে সীমান্ত পেরিয়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের উপকূলে আশ্রয় নিলে সৃষ্টি হয় একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ শরণার্থী সমস্যার। জাতিসংঘ এ ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

বর্তমানে এই রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার বেশ কয়েকটি শিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

আইসিজের শুনানির সময় মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি স্বয়ং সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গান। সেখানে তিনি গণহত্যার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন। একই সঙ্গে এই মামলার শুনানির অধিকার আইসিজের নেই বলেও দাবি করেন। অপরদিকে গাম্বিয়া আদালতের কাছে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও নিপীড়নের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে দুটি আন্তর্জাতিক আদালতে দায়ের হওয়া মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের ন্যায় বিচার পাওয়ার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে বলে মনে করছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সংগঠনটি তাদের ২০২০ সালের বিশ্ব প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক বিচারের জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখোমুখি হয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দমনমূলক ফৌজদারি আইনের ব্যবহার বাড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুক্ত মতপ্রকাশ এবং সমাবেশের অধিকারও তীব্রভাবে কমিয়ে দিয়েছে।

Exit mobile version