‘মিয়ানমার ‌সীমান্তে এখনই সেনা মোতায়েন নয়’

fec-image

বান্দরবানা নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘাতের জেরে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে বারবার মর্টারের গোলা পড়ার ঘটনায় ঢাকা সতর্ক হলেও সীমান্তে এখনই সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা ভাবছে না। তবে সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে সব সংস্থাকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।

রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলম সাংবাদিকদের এ কথা জানান। এর আগে দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে তলব করা হয়।

গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে বান্দরবানের ঘুমধুম ঘোনারপাড়া সীমান্তে শূন্যরেখায় মর্টারের গোলা এসে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে মোহাম্মদ ইকবাল (২৮) নামের এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হন। আহত হন আরও অন্তত আটজন।

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হলে তিনি বেলা সাড়ে ১১টার পর মন্ত্রণালয়ে হাজির হন। সেখানে আধা ঘণ্টার মতো ছিলেন এই দূত। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান রাষ্ট্রদূত।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদপত্র দিয়েছি আমরা। সীমান্তে সম্প্রতি যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয়, সে বিষয়ে তাদের সতর্ক করেছি।

‘তাদের বলা হয়েছে, মিয়ানমারে কী হচ্ছে, সেটা দেখা আমাদের দায়িত্ব নয়। সেটা দেখার দায়িত্ব তাদের। কিন্তু মিয়ানমারের গোলা যেন আমাদের এখানে এসে না পড়ে, সেটা বলা হয়েছে রাষ্ট্রদূতকে।’

একমাসের মধ্যে এ নিয়ে চতুর্থবার তলব করা হলো মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে। এর আগে সবশেষ ৪ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মিয়া মাইনুল কবির একই ধরনের ঘটনায় রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে তলব করে প্রতিবাদপত্র দেন। তারও আগে ২১ ও ২৯ আগস্ট মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদ জানায় ঢাকা।

রাখাইনে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘাতের ধারাবাহিকতায় এ ঘটনা ঘটছে বলা হচ্ছে। তবে সব কিছু মাথায় রেখেই সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রেখেছে বাংলাদেশ।

এক প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্তে সেনা মোতায়েনের কথা সরকার এ মুহূর্তে ভাবছে না। তবে আমরা আমাদের সব এজেন্সির সঙ্গে সভা করেছি। বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে সজাগ থাকতে নির্দেশনা দিয়েছি। মিয়ানমার থেকে কোনো রোহিঙ্গা যেন আর বাংলাদেশে না ঢোকে সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলেছি।

খুরশেদ আলম বলেন, বাংলাদেশ শান্তিকামী রাষ্ট্র, অনেকদিন ধরেই আমরা ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছি। সেজন্য আমরা মিয়ানমারের দূতকে বলেছি, আপনারা আপনাদের সমস্যার সমাধান করুন, যেন আমাদের এখানে কোনো রক্তারক্তি না হয়।

প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে নিয়মমাফিক যা করা যায়, দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সেটাই করেছে উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমাদের কোনো দুর্বলতা নেই, শক্ত অবস্থান থেকেই তাদের সতর্ক করেছি। আমরা আসিয়ান জোটভুক্ত দেশগুলোর কূটনীতিকদেরও বিষয়টি জানাবো।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার, সীমান্ত উত্তেজনা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন