parbattanews

মেজর সিনহা হত্যায় ওসি প্রদীপ জড়িত নেই দাবি করলেন এড. রানা দাশ গুপ্ত

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জড়িত নেই। পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতেই তার মৃত্যু হয়েছে দাবি করেছেন এডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত।

তিনি দাবি করেন, এজাহার ও অভিযোগপত্রে মেজর সিনহাকে গলায় বুট জুতা দিয়ে চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করার যে অভিযোগ আনা হয়েছে ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে তা পাওয়া যায়নি।

রোববার (১৩ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাবেক ওসি প্রদীপের জামিন শুনানী অংশ নিতে এসে কক্সবাজার আদালত চত্বরে আসামি পক্ষের আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এসআই লিয়াকত আলী মেজর সিনহাকে বুকে গুলি করেছিলো। এতে তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। প্রায় দেড় ঘন্টা পথ পাড়ি দিয়ে থানা থেকে এসে পায়ে গলা চেপে ওসি প্রদীপ মৃত্যু নিশ্চিত করার যে অভিযোগ তা অসত্য। মূলত: এসআই লিয়াকত আলীর গুলিতেই মেজর সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছিলো।

আসামিপক্ষের আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত বলেন, আমরা এই মামলার ন্যায় বিচারের স্বার্থে আসামি ওসি প্রদীপের পক্ষে জামিনের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু, করোনার কারণে আদালত জামিন আবেদনের শুনানি করেনি। আগামী ২৭ জুন ধার্য তারিখে আমাদের বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করব। আমরা ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।

গত ৯ জুন সাবেক ওসি প্রদীপ, এএসআই নন্দলালের জামিন আবেদন করা হয়েছিল। আদালত ১৩ জুন জামিন শুনানীর দিন ধার্য্য করে। জামিন শুনানিতে অংশ নিতে ঢাকা থেকে পাঁচ আইনজীবি কক্সবাজার আসেন। আইনজীবী টিমের নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত।

দুদকের একটি মামলায় প্রায় সাত মাস চট্টগ্রাম কারাগারে ছিলেন প্রদীপ কুমার দাশ। গত ১০ জুন সেখান থেকে কক্সবাজার কারাগারে আনা হয় তাকে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়েছে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ (পরিদর্শক) লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি করে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ৬ আগস্ট প্রধান আসামি লিয়াকত আলী ও প্রদীপ কুমার দাশসহ ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালতের আদেশে মামলাটির তদন্ত করে র‌্যাব।

পরবর্তীতে সিনহা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে পুলিশের করা মামলার ৩ জন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ ছাড়া একই অভিযোগে পরে গ্রেফতার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক সদস্য কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও।

মামলায় গ্রেফতার ১৪ আসামিকে র‌্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের মধ্যে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম।

Exit mobile version