মেয়েকে ধর্ষণ ও অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় পেকুয়ায় যুবলীগ নেতার গুলিতে নিহত ১, আহত ২ জন, ইউপি সদস্য আটক

2f54778b2bf131f3bfe973f2e0fbf9db_XL

এম.জুবাইদ,পেকুয়া(কক্সবাজার) সংবাদদাতা:

মেয়েকে ধর্ষণ ও অপহরণে বাধা দেওয়ায় কক্সবাজারের পেকুয়ায় যুবলীগ নেতার গুলিতে এক ব্যাক্তি নিহত, ২ জন গুরুতর আহত হয়েছে। এ ঘটনায় ১ ইউপি সদসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিজের মেয়েকে চোখের সামনে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তাতে বাঁধা দেয়ায় পিতাকে গুলি করে হত্যা করল পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো:আজিম। নিহত ব্যক্তির নাম এয়ার মোহাম্মদ (৫৫)। সে আবুল হাসেমের পুত্র। শুধু পিতাকে হত্যা করেনি মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে ওই যুবলীগ নেতা।

জানা যায়, গত ২০ আগষ্ট ভোররাতে পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব গোঁয়াখালী বটতলী পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরো ২ ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছে। রাতেই কিলার যুবলীগ নেতা আজিমের পিতা ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার গোলাম সোবহানকে পেকুয়া থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভোররাতে উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে নিহত এয়ার মাহমুদের বাড়ীর ঢুকে বাবা-মাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাড়ীতে বেড়াতে আসা তার বিবাহিত কন্যা ও এক সন্তানের জননী প্রবাসী আব্দুল খালেকের স্ত্রী রোজিনা আক্তার (২৫) কে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এসময় তাকে বাঁধা দেয়ায় ওই যুবলীগ নেতা গুলি করে হত্যা করে তাকে। নিহতের স্ত্রী ঝর্ণা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, ‘যুবলীগ নেতা আজিম্যা তার গুন্ডাপান্ডাসহ গভীর রাতে আমাদের বাড়ীতে এসে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে আমার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়, এতে বাঁধা দেয়ায় আমার স্বামীকে বুকে গুলি করে হত্যা করে সে। এরপর আমাকে গুলি করার ভয় দেখিয়ে আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছে।’ স্থানীয় লোকজন জানান, ভোররাতে গুলির বিকট শব্দ পেয়ে লোকজন এসে এয়ার মাহমুদকে বাড়ীর দরজায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তড়িগড়ি করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে যায় পরে অবস্থা আশংকাজনক দেখে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। হাসপাতালে নেয়ার পথেই তার মৃত্যু হয় বলে জানান স্বজনরা।

নিহতের স্বজনরা জানান, গুলিতে এয়ার মাহমুদের বুক এবং পেট ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। এমনকি গুলিতে নিহতের পেটের নাড়িভূড়ি বের হয়ে গেছে বলে জানান তারা। এদিকে কিলার নেশাগ্রস্থ যুবলীগ নেতা মেয়ের পিতাকে খুব কাছ থেকে দেশীয় তৈরী অস্ত্র দিয়ে গুলি করে বলে ধারণা করছে পেকুয়া থানা পুলিশ। স্থানীয়রা আরো জানান, কিলার যুবলীগ নেতা ইয়াবা আসক্ত ছিল। তার অত্যাচারে গোয়াখালী, ভোলাইয়া ঘোনা এলাকার লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। তার ভয়ে তটস্থ থাকত এলাকার লোকজন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে এলাকায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি সহ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সদর ইউপি চেয়ারম্যানের মার্কেট দখল সহ এন্তার অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এতদিন মুখ খুলেনি কেউ।

এলাকার লোকজন কিলার যুবলীগ নেতা আজিমের শাস্তি দাবি করেন। এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি মঈন উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি পরকিয়ার জের বলে মনে হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তার ও ভিকটিম উদ্ধারে থানার কয়েকটি ফোর্স কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনীকে আইনের আওতায় আনা হবে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন