parbattanews

মৌলিক অধিকার নিয়ে স্বাধীনভাবে বাঁচতে চায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্থানীয় বাসিন্দারা

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদেরকে স্থান দিয়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত স্থানীয় বাসিন্দারা। তারই ফলশ্রুতিতে কাটা তারের ভেতরে মানবেতর জীবনযাপন করছে প্রায় ৮০০ স্থানীয় বাসিন্দা। যারা নিজ জন্মভূমিতে পরাধীনতার ভার নিয়ে বসবাস করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। হারাচ্ছে তাদের মৌলিক অধিকার।

কাটা তারের ভেতরে বসবাসরত স্থানীয় জনগোষ্ঠীরা এমন এক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যেখানে রোহিঙ্গারা সব সুযোগ সুবিধা পেলেও তারা বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আর তাই অসহনীয় পর্যায় থেকে পরিত্রাণ পেতে কুতুপালং লম্বাশিয়া এলাকায় বসবাসরত শত শত নারী-পুরুষ শনিবার ১৮ মার্চ) কুতুপালং বাজারে মানববন্ধন পরবর্তী এক বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

মানববন্ধনে কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অন্যত্র স্থানান্তর, স্থানীয় বাসিন্দাদের অবাধে চলাচলের সুযোগ, জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা, স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, ছাত্র-ছাত্রীদের অবাধে যাওয়া-আসার ব্যবস্থা করা, টমটম, সিএনজি চলাচলের সুযোগ দান ও চাষী জমির উপর ক্যাম্প থেকে আসা বর্জ্য অপসারণের দাবি তুলেন তারা।

লম্বাশিয়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তার আহমেদ বলেন, “স্থানীয়দের কাঁটাতারের বেড়া থেকে বের হতে খুব কষ্ট হয়। যারা রোহিঙ্গা তাদের বের হতে কোন সমস্যা হয় না, সমস্যা শুধু স্থানীয়দের। আমাদের থেকে জবাবদিহি করে বের হতে হয় আবার ঢুকতে হয়, এখন আমরা খুব কষ্টে আছি। কারণ আমরা একটা মেয়েকে বিয়ে দিতে পারছি না এবং একটি ছেলের জন্য বউ আনতে পারছিনা। কারণ বউ দেখার জন্য কেউ আসতে চাইলে কাঁটাতারের ভিতরে গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হয় না, সেজন্য আমাদের মেয়েদের বিয়ে দিতে ও ছেলেদের বউ আনতে পারছি না।”

এসময় তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা মানবতার খাতিরে আমাদের জায়গায় স্থান দিয়েছি কিন্তু এখন এমন এক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে নিজেদের অধিকার হারাচ্ছি। রোহিঙ্গারা সকাল-সন্ধ্যা অবাধে বের হচ্ছে-ঢুকছে, ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। কিন্তু এদের জন্য কোন আইন বা জবাবদিহি নেই। সমস্যা শুধু স্থানীয়দের জন্য। আমরা মৃত্যু পথযাত্রী নিয়েও ক্যাম্প এলাকা থেকে যেতে পারছিনা। পাচ্ছি না চিকিৎসা সেবা।

আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতেও নানা সমস্যা পোহাতে হচ্ছে, এমন অভিযোগ অন্যজনের।

এখন আমরা খুব কষ্টে আছি। আমরা অবিলম্বে লম্বাশিয়া এলাকায় বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অন্যত্র স্থানান্তরের জোর দাবি জানাচ্ছি। আর না হয় আমাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি করজোড়ে আবেদন করছি।

Exit mobile version