‘যারা রোহিঙ্গাদের নিতে উপদেশ দিতে আসে তারা বরং তাদের নিয়ে যাক’
সীমান্তে অপেক্ষমাণ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার অনুরোধ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। সংস্থাটিকে বাংলাদেশের পক্ষে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষে আর রোহিঙ্গা নেওয়া সম্ভব না।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এবং সীমান্তে অপেক্ষমাণদের অনুপ্রবেশ করতে চাওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অবস্থান হচ্ছে এ রকম যে, আমরা খুব স্পষ্টভাবে বলেছি যে, আমরা আর একজন রোহিঙ্গাকেও আশ্রয় দিতে রাজি না। কিন্তু কিছু ঢুকে যাচ্ছে। এটা আমরা জানি। সেটাকে আমরা যতটুকু পারা যায় ঠোকানোর চেষ্টা করছি।
তৌহিদ হোসন বলেন, বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) যেটা করছে, প্রতিদিন ফেরত পাঠাচ্ছে, যাদের আমরা ধরতে পারছি। কিন্তু একটা বড়সড় এলাকা নিয়ে তারা বিভিন্ন জায়গা দিয়ে ঢুকছে। সেগুলোকে সব ক্ষেত্রে যে আমরা ধরতে পারছি, সেটা সামর্থ্যেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে; সে কারণে পারছি না। কিন্তু আমরা যেখানে পারছি সেখানে কিন্তু ফেরত দেওয়া চেষ্টা করছি।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে ইউএনএইচসিআরের অনুরোধের তথ্য জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ইউএনএইচসিআর চায় আমরা তাদের আশ্রয় দেই। কিন্তু আমরা তাদের কাছেও স্পষ্ট করেছি, আমাদের যে ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি, আমাদের ভূমিকা যতগুণ হওয়া উচিত তার চেয়ে বেশিগুণ পালন করেছি। আমাদের পক্ষে আর সম্ভব না।
‘যারা আমাদের উপদেশ দিতে আসে তারা বরং তাদেরকে (রোহিঙ্গাকে) নিয়ে যাক। এ হলো আমাদের বক্তব্য’, যোগ করেন তৌহিদ হোসেন।
বিজিবির মহাপরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বিজিবি ডিজি সাক্ষাৎ করেছেন আমার সঙ্গে। এ বিষয়ে আলাপ হয়েছে। এটা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটা বৈঠক হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, রাখাইনে চলমান সংঘাতের মধ্যে সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বাড়লেও রোহিঙ্গাদের অনেকেই পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছেন। সীমান্তের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছেন প্রায় ১২ হাজার রোহিঙ্গা। সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার চেষ্টায় রয়েছেন আরও প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা।