parbattanews

যুক্তরাষ্ট্রে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার, বছরে নিবে ৮০০ জন

বাংলাদেশ থেকে বছরে ৩০০ থেকে ৮০০ রোহিঙ্গা নেবে যুক্তরাষ্ট্র। ৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রথমে পাঁচ থেকে ছয়জনের গ্রুপে ৬২ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে পুনর্বাসন শুরু করবে। এই প্রক্রিয়ায় প্রতি বছর ৩০০ থেকে ৮০০ রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন করা হবে।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারি মন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েসের সাথে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন এসব কথা জানান। এর আগে জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার সাথে বিদায়ী সাক্ষাত করেন।

ড. মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ব্লিঙ্কেনকে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তিনি বিষয়টি বিবেচনায় নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। পরে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে আমাকে জানালো হলো, তারা কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে নেবে। আমি যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ব্রিটেন ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও অনুরোধ করেছিলাম, বাংলাদেশ থেকে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নেয়ার জন্য।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েস আমাকে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ঘোষণা অনুযায়ী বছরে এক লাখ ২৫ হাজার শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেয়া হবে। এরমধ্যে ৩৫ হাজার এশিয়া থেকে নেয়া হবে। বাংলাদেশ থেকে অল্প সংখ্যক রোহিঙ্গাকে নেয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে ৬২ জন রোহিঙ্গাকের নেয়া হবে। ৮ ডিসেম্বর থেকে এসব রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর প্রতি বছর ৩০০ থেকে ৮০০ রোহিঙ্গাকে নেয়া হবে। আমি বললাম, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মোট সংখ্যার তুলনায় এটি নিতান্তই কম। সমুদ্রে এক ফোঁটা পানির মতো। তিনি এটি স্বীকার করে নিয়ে বললেন, এটা প্রক্রিয়ার শুরু।

ড. মোমেন বলেন, পুনর্বাসনের জন্য তৃতীয় দেশে রোহিঙ্গাদের নেয়ার উদ্যোগটা ভালো। আমরা চাই রোহিঙ্গারা সুন্দর জীবন পাক। তবে সমস্যাটা হলো, বাংলাদেশ থেকে উন্নত দেশে যাওয়ার সুযোগ পেলে রাখাইনে থাকা অবশিষ্ট ছয় লাখ রোহিঙ্গা এদিকে চলে আসতে পারে। এটাতে একটি ঝুঁকি রয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নয়েসের সাথে রোহিঙ্গাদের শিক্ষার বিষয়ে আলাপ হয়েছে। আমি জানিয়েছি, ইউনিসেফের সহায়তায় ক্যাম্পগুলোতে ছয় হাজার স্কুল চলছে। তবে ভিন্ন মতাবলম্বীর বিকাশ ঘটানো বন্ধ করতে ক্যাম্পের ঘরে ঘরে মক্তব আমরা বন্ধ করে দিয়েছি।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনই সঙ্কটের মূল সমাধান হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অল্প সংখ্যক রোহিঙ্গাকে তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব না। তবে পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে ২০১৭ সালের আগে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। কেননা মিয়ানমারের সাথে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ২০১৭ সালের পরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার কথা।

Exit mobile version