যুক্তরাষ্ট্র–মেক্সিকো সীমান্তে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের

fec-image

অভিবাসন রোধে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামরিক বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, এক হাজার সেনা সদস্য এবং পাঁচশ নৌ-বাহিনীর সদস্যদের ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো এবং টেক্সাসের এল পাসোতে স্থানান্তরিত করা হবে। তারা সেখানে ‘সীমান্ত মিশন’ নিয়ে কাজ করবেন।

তবে তারা আইন প্রয়োগের কাজে জড়িত থাকবেন না বলে জানান এই কর্মকর্তা।

দুইটি সি-১৭ এবং দুটি সি-১৩০ বিমান, হেলিকপ্টারসহ এ সেনা সদস্যদের মেক্সিকোর নিকটবর্তী যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে পাঠানো হবে। ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট সেলেসেস বলেছেন, পাঁচ হাজারেরও বেশি ‘অবৈধ অভিবাসী’দের সরানোর জন্য সামরিক বিমান সরবরাহ করা হবে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিটকে ট্রাম্পের সর্বশেষ নির্বাহী আদেশ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে ১৫০০ অতিরিক্ত সেনা পাঠানো হবে বলে এ তথ্য জানান তিনি।

যারা অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করবে তাদের পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন লেভিট। তিনি বলেন, “আমেরিকান জনগণ এমন একটি সময়ের জন্য অপেক্ষা করছে, যাতে আমাদের প্রতিরক্ষা বিভাগ প্রকৃতপক্ষে দেশের নিরাপত্তাকে গুরুত্বের সাথে নেয়। এটি আমেরিকান জনগণের এক নম্বর অগ্রাধিকার এবং প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যেই সেই লক্ষ্যে কাজ করছেন।”

লেভিট আরও জানান, ট্রাম্পও যুক্তরাষ্ট্র থেকে “অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়িত করাকে” অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তার ভাষায়, “তোমাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হবে, গ্রেপ্তার করা হবে, তোমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে, এসো না।”

এদিকে মেক্সিকোর দক্ষিণ সীমান্তজুড়ে অভিবাসনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গির তীব্র সমালোচনা করেছেন। ‘রেকর্ডসংখ্যক’ অবৈধ অভিবাসী সীমান্ত অতিক্রম করার প্রস্তুতি নিয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন এবং বর্তমান অভিবাসনকে ‘আক্রমণ’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন তিনি।

বাইডেন প্রশাসনের সময়ে সীমান্ত অতিক্রম রেকর্ড স্তরে পৌঁছেছিল। তবে ট্রাম্প নির্বাচনে জয়লাভ করার এবং ক্ষমতা গ্রহণের আগেই এ সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে শুরু করে।

এছাড়া মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম বলেছেন, মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অভিবাসন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার মেক্সিকোর স্থানীয় সময়ে এক দৈনিক সংবাদ সম্মেলনে শেইনবাউম বলেছেন, মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুয়ান রামন দে লা ফুয়েন্তে এবং সেক্রেটারি অব স্টেট মার্কো রুবিও মঙ্গলবার প্রথম ফোনালাপ করেছেন।

শেইনবাউম কথোপকথনটিকে ‘আন্তরিক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এই দুই কর্মকর্তা অভিবাসন এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে নজর দিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের মতে, এটি চলমান কথোপকথনের একটি অংশ।

শেইনবাউম আরও বলেছেন, মেক্সিকো ট্রাম্পের একটি প্রস্তাবে রাজি হয়নি, যেখানে আশ্রয়প্রার্থীদের দাবিগুলো প্রক্রিয়াধীন থাকাকালীন মেক্সিকোতে অপেক্ষা করতে হবে।

এর আগে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ট্রাম্প। উদ্বোধনী ভাষণে সেসময় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘সমস্ত অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করা হবে’ এবং লক্ষাধিক ‘অবৈধ অভিবাসী’ ফেরত পাঠানো হবে।

তিনি মেক্সিকোর মাদক চোরাকারবারী চক্রগুলোকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দেওয়ার একটি আদেশেও স্বাক্ষর করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন