যেমন চলছে নানিয়ারচরে করোনার টিকা কার্যক্রম

fec-image

নানিয়ারচর উপজেলার সঙ্গে স্থানীয়দের যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে সড়ক ও নদী পথ। কোন কোন স্থানে যোগাযোগ যোগাযোগ ব্যবস্থা এতটাই দুর্গম যে উপজেলা সদরে আসতেই অনেক সময় লাগে, খরচও বেশি ।

উপজেলার এই দুর্গম এলাকার মানুষ কি করে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের সুবিধার আওতায় আসবেন তা নিয়েও স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা।

এখানকার বেশিরভাগ মানুষ জুম ও আনারস চাষ, মাছ ধরে করে জীবিকা নির্বাহ করেন। স্থানীয়রা জানান, বুড়িঘাট,ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন ও সাবেক্ষ‍্যং ইউনিয়নের কিছু এলাকা আছে এসব বন জঙ্গলের ভেতর দিয়ে পায়ে হেঁটে আসতে সময় লাগে। আর যাতায়াত খরচ অনেক বেশি, সারা দেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও ভিতরে তেমন কোনও উন্নয়নের ছোয়া এখনও দুর্গম এসব এলাকায় চোখে পড়ে না। অপর দিকে পাশাপাশি বিদ্যুতের সুবিধা ও মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের কোনও সুবিধা নেই। গ্রামের এসব সাধারণ মানুষ জীবিকার প্রয়োজনে শুধু হাটের দিন দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে উপজেলা নানিয়ারচরে আসেন।

সরকার সারাদেশে করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সুবিধাবঞ্চিত দুর্গম পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারীদের মনে হচ্ছে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এখনও অনেকের মধ্যে টিকা গ্রহণের বিষয়ে কোনও ভালো ধারণা নেই। কেউ কেউ টিকার বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানিয়েছেন। আবার অনেকের ইচ্ছে থাকলেও দুর্গম এলাকা থেকে টিকা নিতে অনীহা প্রকাশ করছেন।

স্থানীয় কিছু জনসাধারনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা বলছে- বর্তমান লকডাউনে কর্মহীন রয়েছি, হাতে কোন টাকা নেই, অনেকের ভাড়া দিয়ে টিকা গ্রহনে অসুবিধা হবে। সেহেতু কর্তৃপক্ষের সদয় অবগতির দিকে তাকানো ছাড়া আর কিছু করার নেই।

অন্যদিকে দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা পারি দিয়ে করোনা টিকা নিতে আসা অনেকের অভিযোগ, অনেক কষ্ট আর ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালে আসলেও অনেকেই টিকা না নিয়ে ফিরেছেন। অনেক মানুষের সমাগম হওয়ায় সারাদিন থাকার পরেও টিকা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পাহাড়ে বাস করা মানুষের আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে জুম চাষ এজন্য সবাই এখন কাজ নিয়ে ব্যাস্ত। তাই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করা সাধারণ মানুষ দিনে এসে দিনে ফিরতে না পারায় টিকা নিতে অনিচ্ছুক অনেকেই।

এদিকে নানিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার জরুরী নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে কোন সাড়া মেলেনি, তবে উপজেলা মেডিকেল অফিসার নুয়েন খীসার মুঠোফোনে কথা বলে জানা গেছে, তিনি বলেন- উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে এখনো কোন সাড়া পাইনি বিস্তারিত তথ‍্য আসলে জানাতে পারবো।

লোকমুখে শোনা গেছে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ১২টি বুথ দেওয়া হবে, তবে কোন কোন স্থানে দেওয়া হচ্ছে অনেকটা অনিশ্চিত রয়ে গেছে।

তবে ওয়ার্ড পর্যায়ে কেন্দ্রের ভিতিত্তে তারিখ ও সময় নির্ধারণ করে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে ওইসব এলাকার মানুষকে টিকা নেওয়ার বিষয়ে সচেতনতামূলক পরামর্শ ও টিকা দেওয়া গেলে অনেকটা নিশ্চিত হতে পারে এমনটাই ধারণা স্থানীয়দের।

নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বলেন, এলাকার মানুষ এতদিন ভ্যাকসিন নিতে অনীহা প্রকাশ করলেও হঠাৎ এ উপজেলায় রোগী বেড়ে গেছে অনেকে ভয়ে রয়েছে। ফলে এই দুর্গম এলাকায় বিশেষ বিবেচনায় করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে সরকারের ঘোষিত কার্যক্রম বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া প্রয়োজন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন