যে উদ্দেশ্যেই ভূমি ব্যবহার করা হউক না কেন,

“স্থানীয় হেডম্যান, কার্বারীসহ পাড়াবাসীকে অন্তর্ভুক্ত করে আলোচনা করতে হবে’’

fec-image

বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের নাইতং পাহাড়ের ম্রো জনগোষ্ঠী ভূমি রক্ষার দাবি নিয়ে এবার লং মার্চ করেছে। রবিবার (৭ফেব্রুয়ারি) সকালে চিম্বুকের রামরি পাড়া থেকে লং মার্চ শুরু হয়ে জেলা শহরের রাজার মাঠে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

এদিকে লং মার্চটি শুরুর পর ৯ মাইল নামক এলাকায় এসে প্রশাসনের বাধার সম্মুখীন হয়। সেখানে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌছিফ আহমেদ ও সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম ম্রো নেতাদের তাদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগের পরামর্শ দিয়ে সমাবেশটি সেখানে শেষ করার অনুরোধ জানান। কিন্তু ম্রো নেতারা বাধা ডিঙ্গিয়ে জেলা শহরের সমাবেশ মিলিত হন।

এই প্রসঙ্গে, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌছিফ আহমেদ জানান, তাদের দাবি দাওয়া থাকলে লিখিত আকারে দিতে বলা হয়েছিল। অনুমতি নিয়ে বৈধভাবে লং মার্চ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তারা আমাদের অনুরোধ না রেখে শহরের দিকে এগিয়ে যায়। এরপরও আমরা তাদের নিরাপত্তা দিয়েছি।

জেলা শহরের রাজার মাঠে সমাবেশে লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠ করে শোনান চিম্বুক পাহাড়ের মেন ইয়াং ম্রো। ওই লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নাইতং পাহাড়ে ‘ম্যারিয়ট হোটেল এন্ড রিসোর্টস’ নামে যে পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এর ফলে আনুমানিক এক হাজার একর ভোগদখলীয় ও চাষের ভূমি বেদখল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি ৭টি পাড়া সরাসরি উচ্ছেদের মুখে পড়বে।

তাদের লিখিত বক্তব্যে পাঁচটি দাবি দাওয়া উত্থাপন করেছে ম্রোরা। সেগুলো হলো- চিম্বুকের নাইতং পাহাড়ে পাঁচতারকা হোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্প বাতিল করতে হবে। অবৈধভাবে ভূমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী স্থানীয় পাড়াবাসী, জনপ্রতিনিধি, ছাত্র নেতাকে হয়রানি ও হুমকি-ধামকি প্রদান করা বন্ধ করতে হবে। চিম্বুকের ম্রোদের বংশ পরম্পরায় ভোগদখলীয় ভূমিতে কোন ধরণের পর্যটন বা বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। স্থানীয় মানুষের ভূমি দখল করে নীলগিরি পর্যটনকেন্দ্র সম্প্রসারণের উদ্যোগ কোনভাবেই গ্রহণ করা যাবে না। যে উদ্দেশ্যেই চিম্বুক পাহাড়ের ভূমি ব্যবহার করা হউক না কেন তা স্থানীয় কার্বারী (পাড়া প্রধান, হেডম্যান (মৌজা প্রধান), জনপ্রতিনিধি ছাড়াও চিম্বুক পাহাড়ের সকল পাড়াবাসীকে অন্তর্ভুক্ত করে আলোচনা করতে হবে।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন পাড়াবাসী সিংপাত ম্রো, ছাত্র নেতা রেংইয়ং ম্রো। ম্রোদের দাবি দাওয়া প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দেলনের জেলা আহ্বায়ক জোয়াম লিয়ান আমলাই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন