যে শর্তে ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলতে পারেন মেসি!
লিওনেল মেসির বয়স হয়ে গেছে ৩৬ বছর। কাতারেই তাই এই কিংবদন্তি শেষ বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছেন বলে মনে করা হয়। বিশ্বকাপ জিতে তার সোনালি ক্যারিয়ারের সকল অপ্রাপ্তিও ঘুচিয়েছেন। মেসিও বলেছেন, ক্যারিয়ারে তার আর কিছু চাওয়ার-পাওয়ার নেই। তারপরও একটি প্রশ্ন বারবারই আলোচনার জায়গা করে নিচ্ছে। আর তা হলো— পরবর্তী ২০২৬ বিশ্বকাপে দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি খেলবেন কি না! এ প্রশ্ন যেমন এই তারকার সামনে করা হয়েছিল, তেমনি আর্জেন্টাইন বিশ্বজয়ী কোচ লিওনেল স্কালোনি থেকে শুরু করে তার সতীর্থদের এখনও সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। মেসি পরবর্তী আসরে খেলবেন কি না সেটি তার ফিটনেস ও ফর্মের ওপর নির্ভর করছে। তবে একটি শর্ত পূরণ হলে নাকি তার খেলার বিষয়টা অনেকটাই নিশ্চিত!
মেসিরা বর্তমানে পরবর্তী বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে এখনও শীর্ষে আছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। যেখানে মাঠের পারফরম্যান্সে তাদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মেসি। অনেকের মতে আগামী কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্ট দিয়ে হয়তো আন্তর্জাতিক ফুটবলকে তিনি বিদায় জানাবেন। তবে ভক্তরা মনের কোণে লুকিয়ে রেখেছে পরবর্তী বিশ্বকাপেও এলএমটেনকে খেলতে দেখার সুতীব্র আকাঙ্ক্ষা।
কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর এখন পর্যন্ত অপরাজিত আছেন স্কালোনির শিষ্যরা। বাছাইয়ের চার ম্যাচে তার সবকটিতেই জিতেছেন। ফলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা আর্জেন্টিনা ধারাবাহিকতা ধরে রাখার লক্ষ্যে আসন্ন দুটি ম্যাচে মাঠে নামবে। আগামী ২২ নভেম্বর ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। ম্যাচটিকে ঘিরে আরও আগেই উন্মাদনা শুরু হয়ে গেছে। এর আগে আরেক সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ের বিপক্ষে ১৭ নভেম্বর খেলবে আর্জেন্টিনা। ম্যাচ দুটির জন্য আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা এখন ক্যাম্প করছেন। সেখানেই মূলত আলবিসেলেস্তে লেফট ব্যাক নিকোলাস তালিয়াফিকোর সামনে মেসির বিশ্বকাপ খেলার প্রসঙ্গ তোলে সংবাদমাধ্যম ‘লা ন্যাসিওন’।
তাদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তালিয়াফিকো জানান, ‘তুমি কী জানো তাকে (মেসি) কোন জিনিসটা জাতীয় দলের খেলায় ধরে রাখবে? সেটি হচ্ছে— আগামী বছরের কোপা আমেরিকায় জয়। যদি আমরা সেখানে শিরোপা জিততে পারি, আমার মনে হয় মেসিকে এটি বিশ্বকাপ খেলার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যদি আমরা কাতারে বিশ্বকাপ না জিততাম তাহলে সে আর খেলতো না। কিন্তু সে এটি জয় করে নিয়েছে এবং পরবর্তী মুহূর্তগুলোও দারুণ উপভোগ করছে।’
বিশ্বকাপের আগে-পরে একাধিক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেছিলেন, মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় যৌথভাবে অনুষ্ঠেয় ২০২৬ বিশ্বকাপে তিনি খেলবেন না। অনেকে মনে করেন, আগামী বছরের কোপা আমেরিকা খেলে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। তবে আর্জেন্টিনার কোচ স্কালোনির বিশ্বাস– মেসি আগামী বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন। এমনকি মেসির জন্য নাম্বার টেন জার্সি তুলে রাখবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ নিয়ে আর্জেন্টাইন তারকা তালিয়াফিকো আরও বলেন, ‘আমরা যদি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে কোপা জিতি, মেসি খেলা চালিয়ে যেতে চাইবে। আমরাও তাকে যতটা সম্ভব আমাদের সঙ্গে পেতে চাই। বিশ্বকাপের পর থেকে দলে যে দারুণ পরিবেশ তৈরি হয়েছে এবং উপভোগের এই অভিজ্ঞতা আরও দীর্ঘায়িত করতে চাই। ক্যাপ্টেন মেসি আমাদের দলের প্রধান প্রতীক। শেষ ম্যাচেও সে তার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে, অল্প সময় খেলেও তার উপস্থিতির জানান দিয়েছিল ভালোভাবেই। আমরাও এই সুবিধাটা যতটা সম্ভব নিতে চাই। পাশাপাশি যখনই প্রয়োজন বিশ্রামে দেওয়া হবে তাকে। সবসময় একই বিষয় নিয়ে মেসির কাছ থেকে কথা শুনতে চাওয়া হাস্যকর, কিন্তু তার মানবিক যোগ্যতা অসাধারণ। সে আমাদের সঙ্গে জাতীয় দলে থাকা উপভোগ করে।’
সাম্প্রতিক সময়ে যখনই মাঠে নেমেছেন, প্রায়শ জ্বলে উঠতে দেখা গেছে মেসিকে। তবে টানা খেলার ধকল ও লম্বা জার্নির কারণে ক্লান্ত মেসিকে মাঝে কিছুদিন চোট ও বিশ্রাম মিলিয়ে মাঠের বাইরে থাকতে দেখা যায়। আর্জেন্টাইন মহাতারকার বয়স ইতোমধ্যে ৩৬ বছর হয়ে গেছে। বিশ্বকাপ জিতে সোনালি ক্যারিয়ারের সকল অপ্রাপ্তিও ঘুচিয়েছেন তিনি। এরপর মেসি নিজেও বলেছেন, ক্যারিয়ারে তার আর কিছু চাওয়ার বা পাওয়ার নেই।