parbattanews

রমজানেও বিদ্যুতের দু:সহ যন্ত্রণায় রাস্তায় জনতা

প্রচন্ড ভ্যাপসা গরমে শিশুসহ নারী ও বয়ষ্ক মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে এই রমজানে। গরমে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি বাড়ছে। এক ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকলে পরবর্তী ২/৩ ঘন্টা বিদ্যুতের দেখা মেলা ভার। ক্রমশই ফুসে উঠছে কক্সবাজারের ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা।

যে কোন সময় গ্রাহক ও বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কাও করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে টেকনাফে মানববন্ধন ও স্বারকলিপি দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ জনতা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিদ্যুতের সেই পুরনো খেলা। কখনো যায় আবার কখনো আসে। এই আসা যাওয়ার মধ্যে কক্সবাজারে এলাকাভেদে প্রায়ই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। তীব্র দাবদাহে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ ও রোজাদাররা।

এতে হাসপাতাল ও সেবাকেন্দ্রসহ মানুষ চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন।

কক্সবাজার শহর শহর এলাকায় মাঝে মাঝে বিদ্যুতের যাওয়া-আসার মধ্যে থাকলেও গ্রামের অবস্থা লেজে গোবরে। তারা দিনে তিন-চার ঘন্টার বেশি বিদ্যুত পাচ্ছেন না। লোডশেডিংয়ের নাম করে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকায় গ্রাহকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

বিদ্যুত না থাকায় প্রচন্ড ভ্যাপসা গরমে শিশুসহ নারী ও বয়ষ্ক মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। গরমে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি বাড়ছে। এক ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকলে পরবর্তী ২/৩ ঘন্টা বিদ্যুতের দেখা মেলা ভার। আর তাই জনজীবনে নেমে এসেছে এক ধরনের অসস্তি। ক্রমশই ফুসে উঠছে জেলার ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা।

এদিকে খবর নিয়ে জানা গেছে, টেকনাফে অসহনীয় গরম ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। অসুস্থ হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। বেশি বিপাকে পড়েছে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। ভ্যাপসা গরমে ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই মানুষের।

তবে আবহাওয়াবীদদের মতে, বৃষ্টি হলে গরমের মাত্রা কমতে পারে।

অপরদিকে গরমের কারণে ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস ও পানিবাহিত নানা রোগবালাই বাড়ায় এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রচুর পরিমানে পানি, স্যালাইন ও লেবুর শরবত খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

বলতে গেলে খরায় পুরছে পথঘাট। পবিত্র এই রমজানে তীব্র গরমে দুর্বিসহ অবস্থা সকল শ্রেণী পেশার মানুষের। আর তপ্ত রাস্তায় ফুটপাতের পথ ধরে হেটে চলা পথচারীদের অনেকেরই ছায়া সঙ্গী ছাতা। তারপরও গরমের এই তাপদাহ থেকে যেনে একটু স্বস্তি নেই।

এদিকে সারাদিন সীমাহীন দুর্ভোগের পর ঘরে ফিরেও এতটুকু স্বস্তি পাচ্ছে না টেকনাফ উপজেলাবাসী।

গত কয়েকমাস ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় দৈনিক অন্তত চার থেকে ১৫ বার করে লোডশেডিং হচ্ছে।

তবে এই গরম ও লোডশেডিংয়ে একটু বেশি ভোগান্তিতে আছে ছাত্র-ছাত্রীরা।

সূত্র বলছে, শহরের পাশাপাশি গ্রামে চলছে ভয়াবহ লোডশেডিং। বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপজেলাগুলোতে অসংখ্যবার বিদ্যুতের আসা-যাওয়া চলছে। যা পূর্বের যেকোনো সময় থেকে অধিক মাত্রায় বেশি।

এদিকে লোডশেডিং নই, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এর দাবিতে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্রদের একটি সামাজিক সংগঠন ফাউন্ডেশন অব দ্যা রাইজিং হিউম্যানিটি (এফএরএইচ)।

তারা বুধবার (২২ মে) দুপুরে টেকনাফ বাস স্ট্যান্ডে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বর্তমান টেকনাফ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের নবাগত ডিজিএম আবদুল মুবিত চৌধুরী উপস্থিত হয়ে মানববন্ধন কর্মসূচিতে যোগদান করে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

এসময় ফাউন্ডেশন অব দ্যা রাইজিং হিউম্যানিটি উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনের স্বারকলিপি গ্রহণ করেন।

স্বারকলিপি গ্রহণ পরবর্তী সে একই স্থানে টেকনাফে বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী আপামর জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন, সরকার বিদ্যুৎ বিভাগে সারা দেশে অভূত উন্নতি সাধিত হলেও পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী লি. (পিজিসিবি) এর কারণে টেকনাফবাসী এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কক্সবাজার উপকেন্দ্র থেকে দীর্ঘ ৯৫ কি.মি দূরে টেকনাফে ৩৩ কেবি লাইনের মাধ্যমে টেকনাফে বিদ্যুৎ আসে। কক্সবাজার-টেকনাফ বিদ্যুৎ পৌছে ৩৩ হাজার ভোল্টের স্থলে ২২ হাজার ভোল্ট। ফলে এত লো-ভোল্টেজে সারা টেকনাফে একসাথে বিদ্যুৎ সরবরাহ করলে উপকেন্দ্রসহ গ্রাহকের বিদ্যুৎ ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি নষ্ট হওয়ার আশংকায় রয়েছে বিধায় বিদ্যুৎ লোডশেডিং দিতে বাধ্য।

এমতাবস্থায় এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে টেকনাফে পাওয়ার গ্রীড কোম্পান লি. (পিজিসিবি) কর্তৃক একটি পাওয়ার গ্রীড যত দ্রুত সম্ভব না বসানো পর্যন্ত টেকনাফে লোডশেডিং এমনকি লো-ভোল্টেজ সমস্যা করবে বলে যোগ করেন ডিজিএম আবদুল মুবিত চৌধুরী।

চারদিকে তীব্র তাপদাহের সঙ্গে লোডশেডিংও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এতে ঘামে ভিজছে কর্মব্যস্ত মানুষ। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে সীমাহীন দুর্ভোগ। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না তেমন কেউ। এমনকি গরমের কারণে স্কুল-কলেজগুলোতেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। ভ্যাপসা গরমে ও তাপদাহে খেটে খাওয়া মানুষসহ সাধারণ মানুষের কষ্ট বেড়েছে বহুগুণ। তাপ প্রবাহের কারণে অনেক এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। মাঝে মধ্যে আকাশে মেঘের ঘনঘটায় আশার সঞ্চার হলেও বৃষ্টির দেখা না মেলায় হতাশ জেলাবাসী।

Exit mobile version