parbattanews

রাখাইনের নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা, ৯ পুলিশ সদস্য নিহত

ডেস্ক রিপোর্ট:

মিয়ানমারের অস্থিতিশীল পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে একটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছে।

শনিবার (৯ মার্চ) রাতে এই হামলা হলেও কিভাবে এই হামলা হয়েছে তা জানা যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, এ ঘটনায় আরও এক পুলিশ আহত এবং অপর একজন নিখোঁজ রয়েছে। ফাঁস হওয়া এক পুলিশ প্রতিবেদনের বরাতে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, হামলার পর খোয়া গেছে পুলিশের বেশ কিছু অস্ত্র। এখন পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।

তবে স্থানীয় এক কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে এই হামলার জন্য আরাকান আর্মিকে (এএ) দায়ী করেছেন। গত জানুয়ারিতে আরাকান আর্মির চালানো একই ধরণের এক হামলার রাখাইনে নতুন করে অভিযান জোরালো করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের নামে চালানো নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের নাগরিকত্বের স্বীকৃতিহীন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার চালানো নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার জেরে সেনা অভিযান চালানোর দাবি করে থাকে মিয়ানমার। ওই ঘটনায় আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে দেশটি। এমন প্রেক্ষাপটে সেখানে নতুন করে সক্রিয় হয়ে ওঠে আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন জনগোষ্ঠীর অধিকারের দাবিতে সক্রিয় আরাকান আর্মি (এএ) নামের ওই গোষ্ঠীটি সম্প্রতি মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে।

শনিবার রাতে হামলা হয় রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তি থেকে এক ঘণ্টার দূরবর্তী উত্তরাঞ্চলীয় গ্রাম ইয়োতায়োকিতে। পাঁচটি সাপ্তাহিক প্রকাশনা বের করা মিয়ানমারের ইলেভেন মিডিয়া গ্রুপের ওয়েবসাইটের খবরে বলা হয়েছে, রাখাইন রাজ্যের পোন্নাগিয়ন উপশহরের ইয়োতায়োকি নিরাপত্তা চৌকিতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই খবরে বলা হয়েছে, রাখাইন রাজ্য পুলিশের ডেপুটি কর্নেল মং মং সোয়ে হামলা এবং তাতে হতাহতের কথা স্বীকার করেছে। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। স্থানীয় একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওয়েবসাইটটি জানিয়েছে, হামলার পর ওই নিরাপত্তা চৌকির পুলিশ প্রধান ও এক ল্যান্স কর্পোরাল পালিয়ে যেতে পেরেছেন।

২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে আরাকান আর্মিতে যোগ দিয়েছে হাজারো তরুণ। গত বছরের শেষ দিক থেকে নতুন করে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা জোরালো করে গোষ্ঠীটি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবসে চারটি পুলিশ পোস্টে এক যোগে হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে তারা। এই ঘটনার পর আরাকান আর্মির অবস্থানের ওপর হামলা জোরালো করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সহিংসতার কারণে নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছে রাখাইনের বেশ কয়েক হাজার বাসিন্দা।

আরাকান আর্মির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে চার সহকর্মীকে গ্রেফতারের অভিযোগ এবং তাদের মুক্তি দাবি করে চলতি মাসে একযোগে পদত্যাগ করেছে রাখাইন রাজ্যের স্থানীয় প্রশাসনের শতাধিক কর্মকর্তা। এছাড়া দেশদ্রোহীতার অভিযোগে এই মাসেই রাখাইনের জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা আয় মং-এর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। এসব ঘটনার কারণে রাখাইনে নতুন করে সহিংসতা ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

Exit mobile version