parbattanews

রাখাইনে ইচ্ছে করে কোভিড-১৯ ছড়াচ্ছে সামরিক বাহিনী: আরাকান আর্মি

মিয়ানমারে রাখাইনের জাতিগত সশস্ত্র একটি গ্রুপ অভিযোগ করেছে যে, রাজনৈতিক ও সামরিক সুবিধা পেতে মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে ইচ্ছা করে কোভিড-১৯ ছড়াচ্ছে। মহামারীর মধ্যে এই অঞ্চলে আরাকান আর্মি (এএ) আর সরকারি বাহিনীর মধ্যে লড়াই অনেক বেড়ে গেছে।

রাখাইনের কিছু অংশে, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল গত কয়েক বছর ধরে যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। ২০১৮ সালের শেষ দিক থেকে দুই বাহিনীর মধ্যে বিক্ষিপ্ত সঙ্ঘর্ষ লেগেই আছে। এএ সে সময় স্বায়ত্বশাসনের দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে। ওই যুদ্ধের কারণে বহু বেসামরিক মানুষ মারা যায় এবং হাজার হাজার গ্রামবাসী ঘরবাড়িহারা হয়। সরকার এএ-কে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা দিয়েছে।

বর্তমানে রাখাইন রাজ্যের তিন মিলিয়ন মানুষের উপর সরকারের ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কারণ, ইয়ানবাই ছাড়া রাজ্যের ১৭টি টাউনশিপের সবগুলোতেই কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে। রাজ্যে এ পর্যন্ত ৫৪০ জন রোগি ধরা পড়েছে।

রাখাইন জনগণের প্রতি দেয়া এক ভিডিও বার্তায় গত সপ্তাহে এএ নেতা মেজর জেনারেল তুন মিয়াত নাইং প্রশ্ন তুলেছেন যে, রাখাইনে কিভাবে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে এবং আক্রান্তের হার অন্য জায়গার চেয়ে সেখানে কেন বেশি।

তিনি বলেন, “কোভিড-১৯ যদিও একটি স্বাস্থ্য সমস্যা, কিন্তু আরও অনেক বিষয় এখানে বিবেচ্য রয়েছে। যেমন, রাখাইনে রাজনৈতিক ও সামরিক কারণে কোভিড ছড়ানো হচ্ছে কি না”।

তিনি আরও বলেন, “মিয়ানমার সরকার আর সামরিক বাহিনী তাদের অধিকার আর ক্ষমতাকে অস্ত্র হিসেবে অপব্যবহার করছে এবং রাখাইন রাজ্যকে রাজনৈতিক, জাতিগত ও সামরিক দিক থেকে মুছে দেয়ার চেষ্টা করছে। তাই এই বিষয়টি বিবেচনার দাবি রাখে”।

এএ প্রধান বলেছেন যে, রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয়ার পরও সরকার তার নিজের চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, সারা বিশ্ব যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে এবং অপ্রয়োজনী সফর বন্ধ রেখেছে, সেখানে হাজার হাজার সরকারি সেনা রাখাইনে ঢুকছে এবং বের হচ্ছে। মনে হচ্ছে, করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্যই তারা এটা করছে।

মেজর জেনারেল বলেন, “মিয়ানমার সরকার আর সেনাবাহিনী মহামারী থেকে সর্বোচ্চ লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের সন্দেহ যে, ইচ্ছে করেই তারা রাখাইনে এটা ছড়াতে দিয়েছে, কারণ এখান থেকে তারা সুবিধা পাবে”।

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের অফিসের মুখপাত্র উ জাউ তে শুক্রবার এএ নেতাদের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে এটাকে ‘মারাত্মক মন্তব্য’ হিসেবে অভিহিত করেন।

এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সারা দেশে উদ্বিগ্ন মানুষেরা যেখানে রাখাইনকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে, সেখানে এএ নেতাদের এ ধরণের বেপরোয়া কথা বলাটা ঠিক হয়নি”। তিনি বলেন সশস্ত্র এই গ্রুপটিই বরং কোভিড-১৯ থেকে রাজনৈতিক ও সামরিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছে এবং স্থানীয় মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা ছড়াচ্ছে।

Source দ্য ইরাবতী

Exit mobile version