parbattanews

রাখাইনে নৃশংসতায় জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবে যুক্তরাষ্ট্র

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

রাখাইন রাজ্যে সহিংসতায় জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে সহিংসতা বন্ধে প্রচেষ্টা চালানোর পাশাপাশি বাস্তুচ্যুতদের নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে সমর্থন অব্যাহত রাখবে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি এবং নীতি সমন্বয়ক ডব্লিউ প্যাট্রিক মার্ফি মার্কিন কংগ্রেসের এক বিশেষ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, রাখাইনে নৃশংসতার মূল্যায়ন করছি আমরা। এক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই কাজ করে যেতে হবে।

এসময় রাখাইনে সহিংসতা ও ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গার পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন মার্কিন সিনেটররা।

যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক ব্যুরোর উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ফি বলেন, রাখাইনে সহিংসতার কারণে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর দীর্ঘমেয়াদি দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে। অর্ধ শতাব্দী ধরে স্বৈরাচারী সামরিক শাসনের পর ১৬ মাস আগে আসা নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে মিয়ানমার শাসন ব্যবস্থায় ভাল কিছু অর্জন করেছিল। কিন্তু ওই অর্জন রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নির্যাতন খর্ব করে দিয়েছে।

মার্ফি বলেন, “রাখাইন সহিংসতার কারণে বাংলাদেশে মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। শরণার্থীদের গ্রহণ করে বাংলাদেশ সরকার যে ভাল কাজটি করেছে আমরা তার প্রশংসা জানাই।”

তিনি বলেন যে যারা সহিংসতা শুরু করেছে এবং চালিয়ে যাচ্ছে তাদের দায়ী করার জন্য নতুন প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হচ্ছে। এছাড়াও মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করা; নির্যাতনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘বিশেষ নিষেধাজ্ঞা’, উত্তর রাখাইন রাজ্যে অভিযানগুলোতে জড়িত ইউনিটগুলো চিহ্নিত করাসহ সব বিকল্প বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত কর্মসূচিগুলোতে মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের নিষিদ্ধ করা ও দীর্ঘমেয়াদি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার কথাও জানান মার্ফি। জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল এবং অন্যান্য সংস্থার সাথে জবাবদিহিতা সংক্রান্ত বিকল্পগুলো নিয়ে পরামর্শ এবং জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনকে প্রবেশাধিকার দিতে বাধ্য করার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র।

তিনি বলেন, “রাখাইন রাজ্যে অস্থিতিশীলতার দীর্ঘমেয়াদি কারণগুলো মোকাবেলার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা কফি আনান উপদেষ্টা কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন সমর্থন করি। রাখাইনে উন্নয়ন,  সেবার অভাব দূর করা, ন্যায়বিচারের অধিকার নিশ্চিত করা এবং নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া গ্রহণ করার মত কাজে পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।”

মার্ফি বলেন,  যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বেসামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে আগ্রহী। যাতে মিয়ানমারের বিভিন্ন জনগোষ্ঠী এবং অন্যান্য অংশীদারকে সাথে নিয়ে এই সঙ্কট এবং সামরিক পরবর্তী যুগের অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়।

মার্ফি তার বক্তব্যের শেষের দিকে বলেন, “আমি খুব স্পষ্ট হতে চাই: আমরা কোনো উপযুক্ত পরিভাষা ব্যবহার থেকে দূরে সরে যাচ্ছি না। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের মাধ্যমে অতিরিক্ত তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের একটি স্পষ্ট নীতি ও প্রক্রিয়া আছে এবং আমরা তা অনুসরণ করব।”

 

সূত্র: south asian monitor

Exit mobile version