parbattanews

রাখাইনে সু চির দলের শীর্ষ নেতাকে হত্যা করেছে আরাকান আর্মি

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) রাখাইনের বুথিডং শাখার চেয়ারম্যান ইয়ে থেইনকে হত্যা করেছে আরাকান আর্মি। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দেশটির সরকারি এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলের বিদ্রোহী গোষ্ঠী ওই নেতাকে অপহরণের পর হত্যা করেছে। আর বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত সোমবার এক বিস্ফোরণে মারা গেছেন ইয়ে থেইন।

ইতিহাস আর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণসহ রাখাইনে সার্বভৌম কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রশ্নকে সামনে রেখে প্রচারণা চালায় আরাকান আর্মি। রাখাইনে প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্যের তথ্য বারবার সামনে আনার মধ্য দিয়ে সেখানকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সচেতন করে তুলছে তারা। কারও ধারণা, এই মুহূর্তে তাদের সদস্য সংখ্যা ৩ হাজার। কেউ আবার মনে করেন, ৭ হাজার সেনা রয়েছে তাদের। তবে সবাই মানেন, সামরিক শক্তি নয়, তাদের প্রকৃত অস্ত্র আরাকানের জনসাধারণের অকুণ্ঠ সমর্থন। গত ১৪ জানুয়ারি মিয়ানমারের পুলিশ চৌকিতে আরাকান আর্মির হামলায় ১৩ জন নিহত হওয়ার জবাবে দেশটির সেনাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। তখন থেকে দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে। তারা সেখানে প্রায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালায়।

নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় মিয়ানমারের পক্ষে লড়াই করায় রাখাইনে সু চির সমর্থনে সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিলেন বুথিডং শাখার চেয়ারম্যান ইয়ে থেইন। একারণে কয়েকদিন আগে তাকে অপহরণ করে আরাকান আর্মির সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের সরকারি এক কর্মকর্তা বলেছেন, অং সান সু চির রাজনৈতিক দলের এক কর্মকর্তা রাখাইন প্রদেশে নিহত হয়েছেন। ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) রাখাইনের বুথিডং শাখার চেয়ারম্যান ছিলেন নিহত ইয়ে থেইন। প্রায় এক সপ্তাহ আগে তাকে অপহরণ করা হয়।

আরাকান আর্মির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এনএলডির নেতা থেইন গত সোমবার নিহত হয়েছেন। বড় ধরনের বিস্ফোরণের কারণে কিছু বন্দি মারা গেছেন এবং অনেকেই আহত হয়েছেন। সে সময় ঘটনাস্থলে ওই নেতাও নিহত হয়েছেন।’

ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপিকে এনএলডির মুখপাত্র মিও নিন্ট বলেছেন, ‘আমরা এনএলডির সদস্যরা তাকে হারিয়ে শোকাহত। সু চির সমর্থনে সমাবেশের পরিকল্পনা করাটা সঠিক ছিল এবং এটা কোনও ধরনের অপরাধ নয়।’

সম্প্রতি রাখাইনে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপকমাত্রায় অভিযান শুরু করেছে আরাকান আর্মি। তারা সেখানে অপহরণ, অভিযান ও বোমাবর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এর জবাবে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় ওই রাজ্যে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেছে সামরিক বাহিনী।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Exit mobile version