রাখাইন এখন মানব কসাইখানা: জাতিসংঘ
পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
মিয়ানমারের উত্তর রাখাইনকে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে খারাপ মানব কসাইখানার একটি হিসেবে বর্ণনা করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার জিয়াদ রা’দ আল হোসাইন।
তার অভিযোগ, রাখাইন ও অন্যান্য এলাকায় বাড়তে থাকা ভয়াবহতা রোধে পূর্বে সমন্বিতভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলের ৩৭তম অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জিয়াদ বলেন, ‘সিরিয়ার অবরুদ্ধ এলাকা পূর্ব গোওতা, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর ইতুরি ও কাসাইস, ইয়েমেনের তাজি, বুরুন্ডি এবং মিয়ানমারের উত্তর রাখাইন সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় মানব কসাইখানায় পরিণত হয়েছে।’
জেনেভা থেকে ইউএনবিপ্রাপ্ত ভাষণে হাইকমিশনার বলেন, নিজ বাড়িতে রোহিঙ্গারা অমানবিক আচরণ, বঞ্চনা ও হত্যার শিকার হয়েছে। এসব দেখে তারা বিপর্যস্ত যে ঘটনার বিপদ বুঝতে পারার পরও কেন তা রোধে তাদের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
দুঃখ-দুর্দশা বাড়ানোর জন্য যারা হত্যা ও আহত করার মতো অপরাধের সাথে জড়িত ছিল তাদের পরই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যকে দায়ী করেছেন জিয়াদ।
তার অভিযোগ, যখন ব্যবস্থা নেয়া সবচেয়ে জরুরি ছিল এবং নিষ্পাপ জনগণের চরম যন্ত্রণা হ্রাস করা যেত তখন ভেটো দেয়া হয়েছে। তাই পাঁচ স্থায়ী সদস্যকে অবশ্যই নির্যাতিতদের সামনে জবাবদিহিতা করতে হবে।
পাঁচ সদস্য দেশের মধ্যে ফ্রান্স ভেটো ব্যবহারের নীতিমালা নিয়ে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। ১১৫টির বেশি দেশের সমর্থন থাকা এই উদ্যোগে যুক্তরাজ্যও যোগ দিয়েছে। ভেটোর ক্ষতিকার ব্যবহার বন্ধ করতে এবার সেই উদ্যোগে চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রকে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হাইকমিশনার জিয়াদ।
গত বছরের আগস্টে নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে ছয় লাখ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এ সংখ্যা প্রকাশ করেছে।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা মেডিসিন সান ফ্রন্টিয়ার (এমএসএফ) জানিয়েছে, গত বছর মাত্র এক মাসে প্রায় সাত হাজার বেসামরিক রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ছিল ৭৩০টি শিশু। এ সংখ্যা প্রাথমিক ধারণার চেয়ে অনেক বেশি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসনের জন্য গত ১৬ জানুয়ারি ‘ফিজিকাল অ্যারেজমেন্ট’ চুক্তি করে দুদেশ। চুক্তি অনুযায়ী প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার দুই বছরের মধ্যে তা শেষ হবে।
সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর