রাখাইন রাজ্যে মধ্যরাত থেকেই বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপল টেকনাফ সীমান্ত

fec-image

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যেই তীব্র লড়াই চলছে। এ লড়াইয়ে মর্টার শেল ও যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া গোলার বিস্ফোরণে আবারও কেঁপে উঠল কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত।বিস্ফোরণ আতঙ্কে সীমান্তের বাসিন্দারা অনেকেই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন বলে জানা গেছে। বিস্ফোরণের ফলে সীমান্তের একাধিক বাড়ি-ঘরে ফাটল ধরেছে। প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্কিত হচ্ছে সীমান্তের বাসিন্দারা।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকেই ভোর পর্যন্ত থেমে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, ‘মনে হচ্ছিল ভূমিকম্প হচ্ছে। বার বার বিস্ফোরণের ঘটনায় এপারের লবণ চাষি, নাফ নদী ও সাগরের জেলে ও মাছ ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল লোকজন চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।’এর আগেও রাখাইন রাজ্যে চলা বিস্ফোরণের আওয়াজের ধাক্কায় সাবরাং গ্রামের একাধিক মাটির ঘরে ফাটল ধরেছে।’

শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটের বাসিন্দা নুরকামাল বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে যুদ্ধের কারণে আমরা রাতে ঘুমাতে পারি না। সীমান্তে উড়তে দেখা যায় যুদ্ধবিমান। একটু পরপর মর্টার শেল ও যুদ্ধবিমানের গোলার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এ রকম প্রায় সময় চলতে থাকে।’

টেকনাফ পৌরসভা জালিয়া পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল কাদের বলেন, ‘দিনের চেয়ে মধ্যরাতের বিস্ফোরণের শব্দ বেশি। বাড়ি সীমান্ত পাড়ে হওয়া নিরাপদ মনে করছি না। মনে হচ্ছে যেকোনো সময় আমার বাড়িতে মর্টারশেল পড়তে পারে।’

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘রাত থেকে মিয়ানমারের ওই প্রান্ত থেকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে বলে এলাকাবাসী আমাকে জানিয়েছেন। তবে তারা যেন আতঙ্কিত না হয় সে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়ছে আরাকান আর্মি। এরই মধ্যে আরাকান আর্মি মংডু টাউনশিপের আশপাশে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) একাধিক সীমান্তচৌকি, সেনা ও বিজিপি ক্যাম্প দখলে নিয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আরিফ উল্লাহ নিজামী বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইনে মধ্য রাতে বিস্ফোরণের বিকট শব্দের আওয়াজ এপারের টেকনাফ সীমান্তে শোনা গেছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকার লোকজনের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। এ ঘটনায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কোস্ট গার্ড ও বিজিবির সদস্যরা সতর্ক পাহারায় রয়েছে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন