parbattanews

রাঙামাটিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ৪ দিন পার, গ্রেফতার হয়নি কোন আসামি (ভিডিও সহ)

রাঙামাটি শহরের হাসপাতাল এলাকায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে রাঙামাটি সদর থানা ছাত্রলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক জয় ত্রিপুরা খুনের চারদিন পার হলেও কোন কুলকিনারা হয়নি এখনো। গ্রেফতার করা যায়নি কোন আসামিকে। এ হত্যাকাণ্ড রহস্যাবৃত্তে আটকে গেছে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্বজনদের আহাজারি থামছে না। শোকের মাতম চলছে পুরো পরিবার জুড়ে। কোন আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে নেতা হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে গত শুক্রবার বিক্ষোভ মিছিল সভা করে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দেয় প্রশাসনকে। ছাত্রলীগের আল্টিমেটাম এর ৭২ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও আসামীরা এখনো ধরা- ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। যে কারণে এটি শহরে চাঞ্চল্যকর ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল। ছাত্রলীগের বর্তমান এবং সাবেক নেতারা এ হত্যাকাণ্ডের জন্য পাহাড়ের তাদের বিরোধী একটি আঞ্চলিক দলকে দায়ী করলেও দলটির নাম প্রকাশ্যে স্বীকার করছে না।

রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা পার্বত্যনিউজকে বলেন, অতীতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাদের হত্যা করতো আমাদের বিরোধী আঞ্চলিক এক রাজনৈতিক দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তাই ছাত্রলীগ নেতা জয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমাদের সন্দেহের চোখ তাদের দিকে রয়েছে। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাদের গ্রেফতার করতে পারবে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান থাকবে, অতি দ্রুত ছাত্রলীগ নেতা হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান করুন।

রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহ এমরান রোকন বলেন, জয় ত্রিপুরা পাহাড়ী জনগোষ্ঠির মানুষকে আওয়ামী লীগের পতাকা তলে আনতে কাজ করেছিলো; এটা তার অপরাধ। যারা পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্র দিয়ে চাঁদাবাজি, হত্যা, গুমের রাজনীতি করে হয়তো তারা এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। অবিলম্বে জয় ত্রিপুরার হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান ছাত্রলীগের সাবেক এ নেতা।

জয় ত্রিপুরার মামা ঝিনুক ত্রিপুরা বলেন, এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড মেনে যাওয়া যায় না। যার বুক খালি হয় সেই বুঝে স্বজন হারার বেদনা। খুনীরা বেশিদূর যেতে পারিনি। যে স্থানে আমার ভাগিনা জয় খুন হয়েছে সেখানে হোটেলে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। পাশাপাশি গণপূর্ত বিভাগ, এলজিডি বিভাগ, স্টেডিয়াম এলাকা এবং দেবাশিষ নগর এলাকার ব্যক্তি বিশেষের ঘরেও সিসি ক্যামেরা রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আন্তরিক ভাবে চেষ্টা চালালে অপরাধীদের গ্রেফতার করা সম্ভব। তাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ দ্রুত যেন জয়ের খুনীদের গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করে।

রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা কবির হোসেন বলেন, ছাত্রলীগ নেতা জয় ত্রিপুরা হত্যাকারীদের হন্য হয়ে খুঁজছে পুলিশ। প্রকৃত অপরাধীদের ধরতে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সাবেক এবং বর্তমান ছাত্রলীগের নেতাদের ভাষ্য, জয় ত্রিপুরা হত্যাকারীদের বিচার অবিলম্বে করতে হবে। না হলে কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।

প্রসঙ্গ গত ১৬ মার্চ দিনগত গভীর রাতে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অসুস্থ জমির উদ্দিনকে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে দেখে নিজ মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরার পথে রাঙামাটি সদর হাসপাতালের মেইন সড়কের ডাক অফিসের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে জয় ত্রিপুরা নিহত হন। এ ঘটনায় জয় ত্রিপুরার বড় ভাই সাগর ত্রিপুরা ১৮মার্চ রাতে রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলো।

YouTube video player

Exit mobile version