parbattanews

রাঙামাটিতে প্রথাগত আইনসমূহ ও বাস্তবায়ন প্রেক্ষিত বিষয়ক সেমিনার

img_5256-copy

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ’র সহযোগিতায় ও স্থানীয় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা প্রোগ্রেসিভ’র যৌথ উদ্যোগে প্রথাগত বিদ্যমান আইনসমূহ ও বাস্তবায়ন প্রেক্ষিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সেমিনার মঙ্গলবার রাঙামাটি আশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রোগ্রেসিভ’র  নির্বাহী পরিচালক সুচরিতা চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে রাঙামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা ও বিশেষ অতিথি হিসেবে সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্ক’র সহ-সভাপতি প্রেমলাল চাকমা, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, রাঙামাটি সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিতা চাকমা বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে মূল ধারণা পত্র উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট নারী আইনজীবী এডভোকেট সুস্মিতা চাকমা এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এ্যাডভোকেট কক্সী তালুকদার।

আলোচনায় বক্তব্য রাখেন এডভোকেট ভবতোষ দেওয়ান, হেডম্যান শান্তি বিজয় চাকমা, নারী নেত্রী নুকু চাকমা, হেডম্যান এসোসিয়েশনের থোয়াই অং মারমা, আশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক সুখেশ্বর চাকমা ও ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অমর জীবন চাকমা।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, জাতিগত নিপীড়ন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও বিভিন্ন কারণে ভিন্ন সংস্কৃতির পাহাড়ী নারীরা সহজেই লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হয়। এ কারণে প্রতিনিয়ত পাহাড়ী নারীরা ধর্ষণ, হত্যা, অপহরণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়।

বক্তরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ১১টি জনগোষ্ঠীর কোন লিখিত প্রথাগত আইন নেই। যুগ যুগ ধরে জনগোষ্ঠীগুলোর সমাজে ব্যবহৃত প্রাচীন রীতিনীতি প্রথাগত আইন হিসেবে মৌখিকভাবে প্রচলিত হয়ে আসছে। সমাজের বির্বতনের ধারায় যুগের দাবীতে অনেক প্রাচীন প্রথা ও রীতিনীতি বর্তমানে পরিবর্তিত হযেছে। তথাপি পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা ও ঐতিহ্যগত সংস্কৃতির ধারাবাহিকতায় নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক অনেক প্রথা ও রীতিনীতি পাহাড়ী সমাজে এখন আর নেই বললে চলে। বক্তরা বলেন, পূর্বে পাহাড়ীদের সমাজে বিয়ে নিবন্ধনের কোন রীতি নেই এবং বিয়ের কোন লিখিত দলিল তৈরী করা হয় না। বর্তমানে প্রথাগত আইন কিছুটি সংস্কারের মধ্যদিয়ে এর কিছুটা পরিবর্তন এসেছে এবং অনেক মৌজার বিবাহ নিবন্ধন প্রচলিত হয়েছে। বক্তরা, পাহাড়ী নারীর প্রতি বৈষম্য ও নির্যাতন বন্ধ করতে নারীর সম-অধিকার সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রথাগত আইন বিশ্লেষণ করে যুগোপযোগী করা, পাহাড়ী সমাজে বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা প্রবর্তন করা, পুরুষের বহু বিবাহ বন্ধ করার জন্য প্রথাগত আইনে বহু বিবাহ নিষিদ্ধ করা, পাহাড়ী নারীদের উপর সহিংসতা বন্ধের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান।

সেমিনারে হেডম্যান, নারী উন্নয়ন সংগঠনের নারী নেত্রী, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Exit mobile version