রাঙামাটিতে বাণিজ্যিক পর্যটন স্পট নির্মাণ নিষিদ্ধ

fec-image

রাঙামাটির পর্যটন নগরী সাজেকসহ পুরো জেলায় জেলা পরিষদের অনুমতি ব্যতিত নতুন করে কোন বাণিজ্যিক পর্যটন স্পট নির্মাণ করা যাবে না বলে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

সোমবার (২৪ মার্চ) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিমের সই করা এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

আদেশে বলা হয়, পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ (ইহার ওপর আনীত সকল সংশোধনীসহ)-এর ২২ ধারার আলোকে প্রণীত প্রথম তফসিলের ক্রমিক ২৮ অনুযায়ী স্থানীয় পর্যটন পার্বত্য জেলা পরিষদের একটি তফসিলভুক্ত কার্য। ইতোমধ্যে স্থানীয় পর্যটন সংক্রান্ত কার্যাদি পরিষদ আইন অনুসারে সরকার পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করেছে। কিন্তু সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সাজেকসহ বিভিন্ন এলাকায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া অপরিকল্পিভাবে বাণিজ্যিক ভবন ও পর্যটন স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। এতে পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ (ইহার ওপর আনীত সকল সংশোধনীসহ) লঙ্ঘিত হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অগ্নিদুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকেও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এজন্য পর্যটন ও বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণে লাগবে অনুমোদন।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৯ মার্চ ঢাকার বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক ভবনে এ নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সাজেকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ, প্রতিকার পাহাড়ের পর্যটন ও পরিবেশ সংশ্লিষ্ট ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় বলা হয়, রাঙামাটি জেলা পরিষদের হাতে পর্যটন বিভাগ হস্তান্তরিত বিভাগ হলেও জেলা পরিষদের কোনও পরামর্শ না নিয়ে যত্রতত্র পর্যটন এবং বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে একদিকে পরিবেশ অন্যদিকে স্থানীয় জাতিগোষ্ঠীর জানমাল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এসব রোধ করার জন্য এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিষয়টি যেহেতু জেলা পরিষদের হাতে ন্যস্ত সেহেতু এটি দেখাশোনা করার জন্য জেলা পরিষদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জেলা পরিষদ শিগগিরই একটি প্রবিধানমালা তৈরি করবে।

সভায় বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। সভায় উপস্থিত সবার মতামতের ঐক্যমত্বের তিনি বলেছেন, পাহাড়ের জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপত্তা এ বিষয়টি আগে প্রাধান্য দিতে হবে। পর্যটনের কারণে স্থানীয় পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ুক এবং মানুষের জানমালের ক্ষতি হয় এমন কার্যক্রম করতে দেওয়া হবে না। সভায় সাত কার্যদিবসের মধ্য জেলা পরিষদকে প্রবিধান তৈরি করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সাজেকসহ রাঙামাটি পার্বত্য জেলার অধিক্ষেত্রে সকল জায়গায় রাঙামাটি পার্বত্য পরিষদের অনুমোদন ছাড়া পর্যটন সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন/স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি নির্দেশনা জারি করা হলো। একইসঙ্গে নির্দেশনা কার্যকরে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ, দফতর, সংস্থার প্রতি নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানিয়েছে জেলা পরিষদ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পর্যটন, রাঙামাটি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন