রাঙামাটিতে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারী নিয়োগ বৈষম্যমুক্ত হবে তো?

fec-image

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান। শান্তিচুক্তির আলোকে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে থাকে। চলতি বছরের ১ মে রাঙামাটি জেলা পরিষদ তাদের নিকট হস্তান্তরিত স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে ছয়টি পদে ৫৮ জন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আবেদনকারীদের আগামীকাল ২০ জুন শুক্রবার নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে জন্মলগ্ন থেকেই বিভিন্ন নিয়োগে কোটা, রাজনৈতিক বিবেচনা এবং ঘুষ-উৎকোচের বিনিময়ে কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির এহেন কর্মকাণ্ডে জেলার চাকরি প্রত্যাশী বিশেষ করে বাঙালি জনগোষ্ঠির নিয়োগপ্রার্থীরা হতাশ হয়ে পড়ছে। একে তো তারা রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা পান না, কোন কোটা সুবিধাও নেই তাদের। উৎকোচ দেয়ার সামর্থ্যও নেই অনেকের।

ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মধ্যে দিয়ে এক নতুন বাংলাদেশে অভ্যুদয়ের সূচনা হয়েছে। এ স্বাধীন নতুন বাংলাদেশে পার্বত্য রাঙামাটি জেলা পরিষদ নিয়োগসহ নানা উন্নয়ন ক্ষেত্রে বৈষম্যমুক্ত হবে নাকি নাকি তার পুরনো রীতি বহাল তবিয়ত থাকবে এই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে জনমনে।

চাকরি প্রত্যাশীদের দাবি, নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে বৈষম্যমুক্ত হওয়ার জন্য। তাই জেলা পরিষদও যেন নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো গোষ্ঠিগত বৈষম্য না করে।

সচেতন মহল বলছে, জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবীদের রক্তের বিনিময়ে আজকের নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ। নতুন এই বাংলাদেশে সকল বৈষম্য পরিহার করে জেলা পরিষদের নিয়োগের ক্ষেত্রে জনসংখ্যার অনুপাতে সমবণ্টন এবং সকলের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে এটাই প্রত্যাশা তাদের।

সরকারের একাধিক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা যখন বাইরে এসে এখানে চাকরি করি তখন দেখি জেলা পরিষদ কর্তৃক নিয়োগ পাওয়া বেশিরভাগ কর্মচারী অনভিজ্ঞ। তারা কোনো কাজ সফলভাবে করতে পারে না।

এটা তাদের দোষের কিছু নয়; যারা তাদের নিয়োগ দিয়েছে তারা অপরাধ করেছে। যোগ্যতা যাছাই-বাচাই না করে অনভিজ্ঞদের রাজনৈতিক বিবেচনায়, হয়তো বা কোটা কিংবা উৎকোচের বিনিময়ে চাকরি প্রদান করা হয়। যে কারণে নিয়োগ পাওয়া এসব কর্মচারী কোন কাজ করতে পারে না।

পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান বলেন, ছাত্রদের রক্তের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। দেশ ফ্যাসিস্টমুক্ত হয়েছে।

এ নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে জেলা পরিষদ কর্তৃক কোনো বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না। স্বাস্থ্য বিভাগে নিয়োগে কোনো বৈষম্য হলে আমরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

রাঙামাটি জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মো. মনছুরুল হক বলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে জামায়াত নেতৃবৃন্দ দেখা করেছে। এ সরকার ছাত্রদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আছে। জুলাই আগস্ট বিপ্লবীদের প্রধান দাবি ছিল মেধার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা।

গত ফ্যাসিস্ট সরকার সকল নিয়োগ প্রক্রিয়াতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও দলীয়করণ করেছিল। জেলা পরিষদের উদ্যোগে স্বাস্থ্যসহকারীসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগে যাতে মেধার মূল্যায়ন যথাযথ হয়, তার জোর দাবি জানাচ্ছি আমরা।

রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার বলেন, এ নিয়োগে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সম্পূর্ণভাবে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হবে।

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্য জেলা পরিষদ, রাঙামাটি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন