parbattanews

রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কা; ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের সর্তক থাকার আহ্বান ডিসি’র

আজ সারাদিন বৃষ্টি হওয়ায় পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।

চলছে বর্ষার মৌসুম। থেমে নেই বৃষ্টি, যে কোনো মুহূর্তে পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। পাহাড় ধ্বসে অনাকাঙ্খিত মৃত্যু এড়াতে প্রতি বছর বর্ষার শুরুতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি নেয়া হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না। তবুও এক শ্রেণির মানুষ চরম ঝুঁকি জেনেও ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়েই বসতি গড়ে তুলছে। বারবার হতাহতের পরও থেমে নেই পাহাড়ে পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস।

এদিকে গতকাল শনিবার থেকে ভারী বর্ষণের ফলে আজ সারাদিন বৃষ্টি হওয়ায় পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে যে কোনো ধরণের দুর্ঘটনা এড়াতে পাহাড়ের পাদদেশে ও কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী স্থানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের সর্তক থাকা ও নিরাপদ স্থান বা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ।

রবিবার (০৭ জুলাই) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ আহ্বান করেন তিনি। অন্যদিকে বিকেলে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত সকলকে নিরাপদ স্থানে বা আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়।
সচেতন ব্যক্তিদের দাবি, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে স্বল্প সময়ের জন্য প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কর্তৃপক্ষ ঢাকঢোল পিটিয়ে পাহাড়ে বসবাসরতদের অন্যত্র সরে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেই দায়িত্ব শেষ করে। ঘূর্ণিঝড় বা বৃষ্টিপাত জনিত কারণে ২০১৭ সালের মতো আরও একটি বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা একেবারেই অমূলক নয়। এ অবস্থায় ‘মৃত্যুকূপে’ বসবাসকারীদের সেখান থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও পুনর্বাসন করার দাবি করেন।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, শহরের ৩১টি জায়গাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলায় ৩ হাজার ৩৭৮  পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার লোক পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন।পাহাড় ধ্বসের ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানির পরও একই স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে ঘরবাড়ি। রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদী, যুব উন্নয়ন এলাকা, মনতলা আদাম, সাপছড়ি, পোস্ট অফিস এলাকা, মুসলিম পাড়া, নতুন পাড়া, শিমুলতলী, মোনঘর, সনাতন পাড়ায় গত বছর সবচেয়ে বেশি পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা চিহ্নিত করে দেয়ার পরও সে সব এলাকায় বসত স্থাপন গড়ে উঠছে অনায়াসে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের (১৩ জুন) প্রবল বর্ষণে ভয়াবহ পাহাড় ধসে রাঙ্গামাটিতে ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এতে দুই শতাধিক মানুষ আহত হন। ব্যাপক ক্ষতি হয় পুরো জেলায়। ফলে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাঙ্গামাটি জেলা। তিনমাস আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছিলেন প্রায় তিন হাজার মানুষ। পরের বছর ২০১৮ সালে একই সময়ে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় প্রবল বর্ষণে মৃত্যু হয় ১১ জনের। বারবার এত হতাহতের পরও থেমে নেইপাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস।

Exit mobile version