রাঙ্গামাটিতে ‘ব্রোকলি’ চাষে সফল এক পল্লী চিকিৎসক

fec-image

কপি মানেই কৃষকরা বুঝতেন ফুলকপি বা বাঁধাকপি। তবে বিলিতি সবুজ ফুলকপিও ফলছে রাঙ্গামাটিতে। কৃষিক্ষেত্রে দিশা দেখাচ্ছে এই সবুজ ফুলকপি। ব্রোকলি রাঙ্গামাটি মানুষের কাছে একেবারেই নতুন সবজি।

এমন একটি শীতকালীন সবজি ফলিয়ে এলাকাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রাঙ্গামাটির দুর্গম লংগদু উপজেলার ভাসান্যাদম ইউনিয়নের চ্যাইলাতলী গ্রামের বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম।

জানা গেছে, ব্রোকলি ক্রসিফেরী গোত্রের অন্তর্ভুক্ত শীতকালিন সবজি। এতে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফোলেট, আঁশ আছে। এই সবজি হৃদরোগ, বহুমূত্র এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। ব্রোকলি জারণরোধী ভিটামিন এ এবং সি সরবরাহ করে কোষের ক্ষতিরোধ করে’। সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও অধিক লাভবান হওয়ায় অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন ব্রোকলি চাষে। এই সবজি পুরো জেলায় ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপা বাজার ঘুরে মোঃ বেলাল উদ্দিন ও সালাউদ্দিন নামে দুই খুচরা বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই সবুজ ফুলকপি (ব্রোকলি) মানুষের কাছে একেবারেই নতুন সবজি। যার কারণে খুব কমই বিক্রি হচ্ছে। তবে নতুন সবজি হওয়ায় দৈনিক ১০ থেকে ১৫ কেজি বিক্রি হচ্ছে।

তারা আরও জানান, এই সবজি রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার কৃষক জাহাঙ্গীর আলম থেকে পাইকারী দরে ক্রয় করেছেন। তারা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।

পল্লী চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম জানান, তাঁর পেশা কৃষক নয় তিনি একজন পল্লী চিকিৎসক। তবে তিনি ২০১০ সালে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ ও ইউএনপি’র যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন কৃষি চাষাবাদ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এই প্রশিক্ষণ থেকে তিনি এই নতুন সবজির চাষ সম্পর্কে ধারণা পান। এরপর দুই বছর ধরে সবুজ ফুলকপির (ব্রোকলি) চাষ করছেন।

প্রথমে গত বছর পরীক্ষামূলক ৫ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন। এতে প্রায় ২০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। এবছর ২০ শতক জমিতে প্রায় ১২‘শ ব্রোকলির চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে মাত্র ২৫ হাজার টাকা। খরচ বাদে লাভ হবে প্রায় ৩৫ থেবে ৪০ হাজার টাকা।

তিনি আরও জানান, এই সবজির পুষ্টিগুণ খুবই ভালো। এটি মানবদেহের ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধসহ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি সবজি। এটির গুণাগুণ সম্পর্কে মানুষকে ধারণা দিতে পারলে এর চাহিদা বাড়বে এবং অনেক কৃষক এই সবজি চাষে ঝুঁকবে বলে তিনি আশা করেন।

রাঙ্গামাটির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, চলতি মৌসুমে এ জেলায় শীতকালীন ব্রোকলি চাষ হয়েছে প্রায় ১ একর জমিতে। এরমধ্যে জেলার লংগদু উপজেলা, কুতুকছড়ি, সাপছড়ি এলাকায় এই শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সফল হয়েছে লংগদু উপজেলার জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি আরও বলেন, এ সবজি চাষ কৃষকদের মধ্যে কীভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এবং আগামী বছর থেকে ব্রোকলি চাষ আরো বাড়বে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন