parbattanews

রাজধানীতে উদ্বোধন হলো চারদিনব্যাপী পার্বত্য মেলা

রাজধানী ঢাকার বেইলী রোডে অবস্থিত শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে উদ্বোধন হয়েছে পার্বত্য মেলার। বুধবার (৫ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে তিনটায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্বোধন করেন স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি।

এ সময় প্রধান অতিথি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যখনই গিয়েছি সেখানকার মানুষ আমাকে একটি কথাই বলেছেন, সেটি হচ্ছে স্যার, ‘আমরা পাহাড়ে প্রচুর ফসল এবং ফল-ফলাদি উৎপাদন করি। কিন্তু রাস্তাঘাট এবং বিপণনের সুযোগের অভাবে সেগুলোর ন্যায্যমূল্য আমরা পাই না।’ পাহাড়ের স্থানীয় কুটির শিল্পের সাথে যারা জড়িত আছেন তারাও বলেছেন, ‘আমরা আমাদের পণ্যের যথাযথ প্রচার এবং বিপণনের সুযোগ পাচ্ছি না।’ তাদের এই সমস্যা দূর করতেই মূলত রাজধানীর বুকে প্রতি বছর এই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এই মেলায় তাদের উৎপাদিত ফসল, ফল-ফলাদি এবং বিভিন্ন সামগ্রী দেশবাসীর সামনে প্রদর্শন করার সুযোগ পাচ্ছেন। তাতে তাদের পণ্যের পরিচিতি যেমন বাড়ছে, তেমনি বেচাবিক্রি বাড়ছে। সেই সাথে পাচ্ছেন ন্যায্যমূল্যের নিশ্চয়তাও।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও আন্তরিকতায় পাহাড়ে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। রাস্তাঘাট হচ্ছে, অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়নও হচ্ছে। কিন্তু মাঝে মধ্যে সেখানে খুন-খারাবি সংঘটিত হওয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা সঙ্কট এখনো রয়েগেছে। সেটা কাটাতে আমরা সেখানকার পুলিশকে ব্যাপকভাবে শক্তিশালী করার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছি। পরিত্যক্ত সেনাক্যাম্পগুলোতে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সংকট থাকবে না।

সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, এ মেলার মাধ্যমে আমরা যারা পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ, আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সমতলের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি। এ ছাড়া পার্বত্য অঞ্চলে উৎপন্ন বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে দেশের সর্বস্তরের মানুষ একটা ধারণা পাচ্ছে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হামিদা বেগম, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপুসহ অন্যান্যরা।

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর প্রচার ও বিপণনের মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

উদ্বোধনের পর পর মেলা প্রাঙ্গণ সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ৬ জানুয়ারি থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। এছাড়াও প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে পাবর্ত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।

এবারের চারদিনব্যাপী পার্বত্য মেলায় ৯১টি স্টল রয়েছে। স্টলসমূহের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী, প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী, তিন পার্বত্য জেলায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য সামগ্রী, হস্ত শিল্প, ঐতিহ্যবাহী কোমর তাঁতে বোনা পণ্য, ঐতিহ্যবাহী পার্বত্য খাবারদ্রব্য ইত্যাদি।

Exit mobile version