রামগড়ে পানিতে ডুবিয়ে শিশুকে হত্যা, আটক ৪

fec-image

খাগড়াছড়ির রামগড়ের প্রত্যন্ত গ্রাম ওয়াইফা-পাড়ায় ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া শিশু ফাহিম (১১)’কে পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছে ৯ম শ্রেণির ছাত্র মাইন উদ্দিন (১৬)।

নিহত ফাহিম ঐ গ্রামের মো. সাইফুল ইসলামের ছেলে ও নতুনবাজার মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণির ছাত্র। হত্যাকারী মাইন একই গ্রামের মুমিন উল্লাহর ছেলে ও একই মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির ছাত্র।

মাইন জানায়, ‌‘অসম্মান’ করার প্রতিশোধ নিতে ফাহিমকে হত্যা করে। তার সঙ্গে ৩ সহযোগিও ছিল। তারা হলো- একই গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে আসাদ উল্ল্যাহ গালিব (১০), শফিকুল ইসলামের ছেলে আজাদ হোসেন উচাইদ (১৫) ও মীর হোসেনের ছেলে মো. আল ফাহাদ (১৪)।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। পরে বুধবার ৪ শিশু-কিশোরকে আটকের পর ঘটনা উদঘাটিত হয়।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করে কিশোর গালিব জানায়, ফাহিম তাকে ’অসম্মান’ করার প্রতিশোধ নিতেই সে তাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং মঙ্গলবার সকালে শিশু ফাহিমকে কৌশলে গ্রামের নির্জন এলাকায় একটি পুকুরে নিয়ে যায় মাইন উদ্দিনসহ সহযোগী আরো ২ জন। গোসল করতে তারা তিন জন পুকুরে নামে। এসময় মাইন উদ্দিন ফাহিমকে পানির মধ্যে চেপে ধরে রাখে। এক পর্যায়ে ফাহিম অজ্ঞান হয়ে পড়লে তারা দুজন তাকে টেনে পুকুরপাড়ে উঠায়। পরে ফাহিমের অচেতন দেহ টেনে হিঁচড়ে পাশের উঁচু টিলার গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য মাইন উদ্দিন জঙ্গলি লতা দিয়ে গলায় শক্ত করে পেঁচিয়ে রাখে। কিছুক্ষণ পর মৃতদেহ টেনে-হিঁচড়ে টিলা থেকে নামিয়ে পুনরায় ঐ পুকুরের পাড়ে নিয়ে যায় তারা।

গালিব আরো জানায়, হত্যার পর মাইন উদ্দিন তাদের ৩ সহযোগীকে ৩ পুড়িয়া গাঁজা দিয়ে বলে কোনোভাবেই যেন ঘটনা ফাঁস না হয়।

নিহত ফাহিমের বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার দুপুরেও ফাহিম বাড়ি না আসায় তারা সবাই মিলে তাকে খোঁজাখুজি শুরু করেন। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে জঙ্গলঘেরা পুকুর পাড়ে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হানিফ বলেন, আমরা এদের আটক করে তাৎক্ষণিকভাবে রামগড় থানা পুলিশসহ সেনাবাহিনীকে খবর দিয়েছি। তবে কেউ এখনও আসেননি।

মো. হানিফ আরও বলেন, গ্রামবাসীর পাহারায় স্থানীয় পাড়া কেন্দ্রে চারজনকে আটকে রাখা হয়েছে। পুলিশ বা আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী এলে তাদের কাছে চারজনকে সোপর্দ করা হবে।

রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবপ্রিয় দাশ বলেন, ঘটনাটি গ্রামবাসীরা তাকে জানিয়েছেন। চলমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি বলেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: শিশু, হত্যা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন