রামগড়ে নিজ কন্যাকে ধর্ষণকারী পলাতক কাশেম গ্রেফতার


খাগড়াছড়ির রামগড়ে নিজ মেয়েকে ধর্ষণকারী পলাতক বাবা আবুল কাশেম(৪৩) প্রকাশ শিয়ল কাশেমকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
রামগড় থানার পুলিশ শনিবার(২৭জুলাই) ছদ্মবেশ ধারণ করে খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে তাকে আটক করে। এর আগে গত ১৯ জুলাই ধর্ষণে স্বামীকে সহযোগিতার অভিযোগে পুলিশ মনোয়ারা বেগমকে গ্রেফতার করে।
বর্বরোচিত এ ঘটনায় ১৯ জুলাই বিকালে রামগড় থানায় একটি মামলা রুজু হয়। ধর্ষণের শিকার ৮ম শ্রেণীর ঐ মাদ্রাসা ছাত্রীর আপন চাচা ওমর ফারুক বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় মেয়ের বাবা আবুল কাশেম(৪৩)কে প্রধান আসামি এবং ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে মা মনোয়ারা বেগমকে দুই নম্বর আসামি করা হয়।
পুলিশ জানায়, মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর নরপশু আবুল কাশেম পালিয়ে যায়। তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশ গত ৬-৭দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। এরমধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগ করে তার অবস্থান ও গতিবিধি নিশিচত হয় পুলিশ।
আইনজীবী সেজে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার সাথে সর্ম্পক স্থাপন করা হয়। ফ্রি আইনী সহায়তার মাধ্যমে আদালত হতে জামিন নিয়ে দেয়ার কথা বলে তাকে শনিবার (২৭ জুলাই) খাগড়াছড়ি আদালত প্রাঙ্গনে ডেকে আনা হয়। দুপুর একটার দিকে আদালত প্রাঙ্গনে আসা মাত্র আইনজীবীর ছদ্মবেশে সেখানে অবস্থানকারি পুলিশ তাকে ধরে ফেলেন। রামগড় থানার ওসি তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নানের নেতৃত্বে এস আই আনোয়ার ও এএসআই(প্রো) ফরিদ ফাঁদ পেতে তাকে গ্রেফতার করে।
ওসি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কাশেম মেয়েকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।
রামগড় উপজেলার খাগড়াবিলের নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃতআমির হোসেনের ছেলে আবুল কাশেম পেশায় দিন মজুর। ভিকটিম মাদ্রাসা ছাত্রী অভিযোগ করে, তার দিনমজুর পিতা গত ২ জুলাই রাতে জোরপূর্বক প্রথমবার তাকে ধর্ষণ করে। ঐদিন গভীর রাতে তার শোয়ার কক্ষে এসে ধর্ষণ করতে চাইলে সে বাবার হাত পা ধরে ক্ষমা চায়। অনেক আকুতি মিনতি করলেও পিতারুপী ঐ নরপশুর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেনি অসহায় কন্যাটি। জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয় তাকে।
একইভাবে আরও ২-৩ রাত ধর্ষণের শিকার হয় সে। সর্বশেষ গত ১২ জুলাই গভীর রাতে তার শোয়ার কক্ষে ধর্ষণ করতে গেলে সে বাবাকে বলে কাল মাদ্রাসায় আমার কোরআন মজিদ পরীক্ষা। আমার সাথে খারাপ কাজ করবেন না। আমার সাথে এভাবে খারাপ কাজ না করে বিষ খাইয়ে আমাকে মেরে ফেলেন। কিন্তু নরপশু মেযের কোন কথাই শুনেনি। বরং ধর্ষণের কথা প্রকাশ করলে গলাটিপে হত্যা করে লাশ বস্তায়ভরে মাটিতে পুঁতে ফেলার ভযভীতি দেখায় সে।
ভিকটিম জানায়, ঘরের একটি কক্ষে তার মা বাবা থাকে, পাশের কক্ষে চার ছোটভাইকে নিয়ে সে থাকে। গভীর রাতে ওদের কক্ষে এসে সে তাকে ধর্ষণ করতো। ভিকটিম আরও অভিযোগ করে, তার মাও ঘটনা জানে। ধর্ষণের কাজে মাও তার বাবাকে সাহায্য করতো। সে চিৎকার চেঁচামেচি করতে চাইলে মা তার মুখ চেপে ধরতো।
ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর স্থানীয ইউপি মেম্বার মো. আব্দুল হান্নান ১৯ জলাই রাতে ভিকটিম ও তার মাকে থানায় হাজির করেন। ভিকটিম আবুল কাশেমের বড় মেয়ে। ৩ থেকে ৮ বছর বয়সের চারজন শিশুপুত্র আছে তার। ভিকটিম ও তার মাকে র্দীঘ জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগের সততা নিশ্চিত হওয়ার পর ১৯ জুলাই বিকালে ভিকটিমের চাচার দায়ের করা এজাহারমূলে পুলিশ ঐদিন একটি মামলা রুজু করে।