নিজস্ব প্রতিবেদক, রামগড়:
খাগড়াছড়ির রামগড়ে জনসংহতি সমিতির সংস্কার গ্রুপের উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মোহন কুমার ত্রিপুরা(৩০)কে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ জানুয়ারী) রাত ৭টার দিকে একটি বাড়িতে মদের আসরে প্রতিপক্ষের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। নিহতে শ্যালক সুমন ত্রিপুরা এ ঘটনার জন্য ইউপিডিএফ’র প্রসীত গ্রুপকে দায়ি করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ভয় ও আতংক দেখা দিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, রামগড় পৌরসভার জগন্নাথপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে সোমবার রাত ৭টার দিকে মোহন ত্রিপুরা তার অপর দুই বন্ধু মুন্না ও দেবুসহ মদের আসরে বসে। এসময় দুটি মোটর সাইকেলে করে আসা ৫-৬ জন অস্ত্রধারী আকস্মিকভাবে ওই ঘরে ঢুকে মোহনকে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই অস্ত্রধারীরা চিনছড়িপাড়ার দিক থেকে আসে এবং হত্যাকাণ্ডের পর আবার মোটরসাইকেলে করে ঐদিকে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষন করে।
খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুলিবিদ্ধ মোহনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে পাঠায়। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বুকের বিভিন্ন স্থানে চারটি গুলি বিদ্ধ হয়।
খবর পেয়ে রামগড় বিজিবি জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মো. তারিকুল হান্নান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নিহত মোহন ত্রিপুরা খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা পৌরসভার গাজীনগরের কলিন্দ চন্দ্র মহাজনপাড়ার কৃষ্ণ কুমার ত্রিপুরার ছেলে। সে তিন বছর ও সাড়ে ৩ মাস বয়েসের দুটি শিশু সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে রামগড় পৌরসভার ডেবারপাড় এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
স্ত্রী হ্যাপী ত্রিপুরা স্বামীর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোন কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। তবে মোহনের শ্যালক সুমন ত্রিপুরা অভিযোগ করেন, ইউপিডিএফের প্রসীত গ্রুপের সন্ত্রাসীরাই তার ভগ্নিপতিকে হত্যা করেছে।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, নিহত মোহন ত্রিপুরা দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে রামগড় উপজেলায় সাংগঠনিক দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। জেএসএস সংস্কারের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও দলের চাঁদা আদায়ের কাজও করতো সে।
রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ তারেক মো. আব্দুল হান্নান জানান, যে ঘরে মদের আসরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয় সেখান থেকে চাইনিজ রাইফেলের তিন রাউন্ড গুলির খোসা ও একটি তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত ও মামলা রুজুর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।