parbattanews

রামগড়ে মেয়েকে ধর্ষণে স্বামীকে সহযোগিতাকারী মা গ্রেফতার 

খাগড়াছড়ির রামগড়ে নিজ মেয়েকে ধর্ষণের কাজে স্বামীকে সহযোগিতার অভিযোগে পুলিশ মনোয়ারা বেগম নামে এক নারীকে গ্রেফতার করেছে। বর্বরোচিত এ ঘটনায় শুক্রবার(১৯ জুলাই)বিকালে রামগড় থানায় একটি মামলা রুজুর পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

ধর্ষণের শিকার ৮ম শ্রেণীর ঐ মাদ্রাসা ছাত্রীর আপন চাচা ওমর ফারুক বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় মেয়ের বাবা আবুল কাশেম(৪৩)কে প্রধান আসামি এবং ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে মা মনোয়ারা বেগমকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। পুলিশ পিতারুপী ঐ নরপশু কাশেমকে গ্রেফতারে জোর অভিযান চালাচ্ছেন। রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ মো: ফরহাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রামগড় উপজেলার খাগড়াবিলের নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ভিকটিম মাদ্রাসা ছাত্রী অভিযোগ করে, তার দিনমজুর পিতা আবুল কাশেম(৪৩) গত ২ জুলাই রাতে জোরপূর্বক প্রথমবার তাকে ধর্ষণ করে। ঐদিন গভীর রাতে তার শোয়ার কক্ষে এসে ধর্ষণ করতে চাইলে সে বাবার হাত পা ধরে ক্ষমা চায়। অনেক আকুতি মিনতি করলেও পিতারুপী ঐ নরপশুর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেনি অসহায় কন্যাটি। জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয় তাকে। একইভাবে আরও ২-৩ রাত ধর্ষণের শিকার হয় সে।

সর্বশেষ গত ১২ জুলাই গভীর রাতে তার শোয়ার কক্ষে ধর্ষণ করতে গেলে সে বাবাকে বলে কাল মাদ্রাসায় আমার কোরআন মজিদ পরীক্ষা। আমার সাথে খারাপ কাজ করবেন না। আমার সাথে এভাবে খারাপ কাজ না করে বিষ খাইয়ে আমাকে মেরে ফেলেন। কিন্তু নরপশু মেযের কোন কথাই শোনেনি। বরং ধর্ষণের কথা প্রকাশ করলে গলাটিপে হত্যা করে লাশ বস্তাযভরে মাটিতে পুঁতে ফেলার ভযভীতি দেখায় সে। ভিকটিম জানায়, ঘরের একটি কক্ষে তার মা বাবা থাকে, পাশের কক্ষে চার ছোটভাইকে নিয়ে সে থাকে। গভীর রাতে ওদের কক্ষে এসে সে তাকে ধর্ষণ করতো। ভিকটিম আরও অভিযোগ করে, তার মাও ঘটনা জানে। ধর্ষণের কাজে মাও তার বাবাকে সাহায্য করতো। সে চিৎকার চেঁচামেচি করতে চাইলে মা তার মুখ চেপে ধরতো।

ভিকটিম জানায়, ১২ জুলাই সর্বশেষ ধর্ষণের শিকার হওয়ার পরের দিন ঘটনাটি তার দাদীকে বলে। কিন্তু দাদীর কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে ১৪ জুলাই তার চাচা ওমর ফারুককে জানায়। ১২ জুলাই ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থেকে সে রাতে দাদীর ঘরে থাকতো।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো: আব্দুল হান্নান বলেন, বৃহস্পতিবার(১৮ জুলাই) ভিকটিমের চাচা ওমর ফারুক ঘটনাটি সমাজের সভাপতি কামাল উদ্দিনকে জানালে তারা সবাই জানতে পারেন। ইউপি মেম্বার আরও জানান, ঘটনাটি শোনার পর গ্রামের মুরুব্বিদের উপস্থিতিতে ভিকটিমের মুখে অভিযোগটি শোনেন তারা। মেযের মাও অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন তাদের কাছে। পরে সমাজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহষ্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভিকটিম ও তার মাকে থানায় নিযে আসেন।

তিনি বলেন, ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার খবর পেয়ে ঐ নরপশু আবুল কাশেম গা ঢাকা দেয়। তিনি জানান, ভিকটিম ঐ নরপশুর বড় মেয়ে। ৩ থেকে ৮ বছর বয়সের চারজন শিশুপুত্র আছে তার। বৃহস্পতিবার রাত প্রায ১২টা পর্যন্ত ভিকটিম ও তার মাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন থানার ওসি(তদন্ত) মো: মনির হোসেন।

শুক্রবার(১৯ জুলাই) রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ মো. ফরহাদ ভিকটিম ও তার মাকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন। র্দীঘ জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগের সততা নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ শুক্রবার বিকালে মামলা রুজু করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ মো: ফরহাদ বলেন, মায়ের সহায়তায় বাবার হাতে মেয়ের ধর্ষতি হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। তিনি জানান, শুক্রবার বিকালে ভিকটিমের চাচা ওমর ফারুক বাদি হয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় মেয়ের বাবা আবুল কাশেমকে প্রধান আসামি এবং মা মনোয়ারা বেগমকে ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে দুই নম্বর আসামি করা হয়। পুলিশ মনোয়ারা বেগমকে গ্রেফতার করেছে। ধর্ষক পিতাকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

Exit mobile version