parbattanews

রামগড়ে শ্বশুরবাড়িতে জামাই খুন

বিয়ের মাত্র ৫দিন পর নববধূকে নিতে এসে শ্বশুরবাড়িতে খুন হন জামাই চাইথোয়াই অং মারমা (৩৬)। একই বিছানায় ঘুমন্ত স্বামীকে গলা কেটে কে বা কারা খুন করলো এর কোন কিছুই জানেন না বলে দাবি নববধূ চপাইয়ে মারমার (২০)।

খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাতাছড়ার প্রত্যন্ত পাহাড়ি পল্লী দক্ষিণ নতুন পাড়ায় ঐ শ্বশুরবাড়ি থেকে পুলিশ রবিবার (২৫ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে নিহত চাইথোয়াই অং মারমার মরদেহ উদ্ধার করেছে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নববধূ চপাইয়ে মারমা ও শ্যালক উখ্যাচিং মারমাকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, রামগড় সদর ইউনিয়নের লালছড়ি গ্রামের ব্রজেন্দ্র মারমার ছেলে চাইথোয়াই অং মারমা গত ২০ জুলাই বিয়ে করেন উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রাম দক্ষিণ নতুন পাড়ার মৃত পেঞ্চচিও মারমার মেয়ে চপাইয়ে মারমাকে। এটা দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের পর নববধূ স্বামীর বাড়িতে ২-৩দিন থেকে বাপের বাড়ি বেড়াতে আসে। শনিবার (২৪ জুলাই) রাতে স্বামী চাইথোয়াই স্ত্রীকে নিতে শ্বশুরবাড়ি আসেন। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে শ্বশুর বাড়ির একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন স্বামী স্ত্রী দুজন। গভীর রাতে কে বা কারা ঘরে ডুকে ঘুমন্ত অবস্থায় চাইথোয়াইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। সকালে স্ত্রী চপাইয়ে মারমা হত্যার খবরটি নিহত স্বামীর পরিবারকে মোবাইল ফোনে জানায়।

পরে স্বজনরা থানায় খবর দিলে পুলিশ রবিবার বিকালে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। একই বিছানায় ঘুমালেও স্বামীকে কে বা কারা গলা কেটে হত্যা করলো তার কোন কিছুই জানতে পারেনি বলে জানান স্ত্রী চপাইয়ে মারমা।

রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, নিহত চাইথোয়াই অং মারমার প্রথম স্ত্রী অন্যজনের সাথে পালিয়ে যাওয়ার পর গত ২০ জুলাই চপাইয়ে মারমাকে বিয়ে করে। চপাইয়ে মারমারও আগে বিয়ে হয়েছিল। সে সংসারে দুবছরের একটি মেয়েও আছে। গত প্রায় ৬ মাস আগে প্রথম স্বামী পাইচা থোয়াই মারমার সাথে তার বিবাহ বিচ্ছদ হয়।

তিনি আরও জানান, দ্বিতীয় বিয়ে বসার ২-৩দিন পর প্রথম স্বামী ফোন করে তার ঘরে আবার ফিরে যেতে প্রস্তাব দেয় চপাইয়ে মারমাকে। ওসি সামছুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এ হত্যার ঘটনার সাথে চপাইয়ে মারমার প্রথম স্বামী পাইচা থোয়াই মারমার জড়িত থাকার বিষয় সন্দেহ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, পাহাড়ের আঞ্চলিক কোন সংগঠনের সন্ত্রাসীদের দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটনানো হতে পারে। এ কারণেই হয়তো ঐ সন্ত্রাসীদের ভয়ে নিহতের স্ত্রী বা শ্বশুর বাড়ির কেউ মুখ খুলছে না।

তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্ত্রী চপাইয়ে মারমা ও শ্যালক উখ্যাচিং মারমাকে আটক করে থানায় রাখা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর হয়েছে। মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন আছে।

Exit mobile version