রামগড়ে শ্বশুরবাড়িতে জামাই খুনের ঘটনায় স্ত্রী ও শ্যালক গ্রেপ্তার
খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাতাছড়ার প্রত্যন্ত পাহাড়ি পল্লী দক্ষিণ নতুন পাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে জামাই খুন হওয়ার ঘটনায় পুলিশ নিহতের নববধূ চোপাই মারমা (৩০) ও শ্যালক উক্যচিং মারমা (১৯) কে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতদের সোমবার (২৬ জুলাই) খাগড়াছড়ি জেলা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিহত চাইথোয়াই অং মারমার ভাই অংগ্য মারমার (৩২) রামগড় থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার (২৫ জুলাই) রাতে দায়ের করা ঐ মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয় চোপাই মারমার প্রথম স্বামী পাইসাথৈই মারমাকে (৩২)। শ্যালক ও স্ত্রীকে ২য় ও ৩য় আসামি করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়।
উল্লেখ্য, বিয়ের মাত্র ৫দিন পর শনিবার রাতে নববধূকে নিতে এসে শ্বশুরবাড়িতে খুন হন চাইথোয়াই অং মারমা (৩৬)। ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়৷ পুলিশ রবিবার (২৫ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রাম পূর্ব নতুন পাড়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে নিহত চাইথোয়াই অং মারমার মরদেহ উদ্ধার করে।
রামগড় সদর ইউনিয়নের লালছড়ি গ্রামের ব্রজেন্দ্র মারমার ছেলে চাইথোয়াই অং মারমা গত ২০ জুলাই বিয়ে করেন উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রাম পূর্ব নতুন পাড়ার মৃত পাইসাও মারমার মেয়ে চোপাই মারমাকে। এটা দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। চাইথোয়াই অং মারমার প্রথম স্ত্রী অন্যজনের সাথে পালিয়ে যাওয়ার পর গত ২০ জুলাই চোপাই মারমাকে বিয়ে করে। চোপাই মারমারও আগে বিয়ে হয়েছিল মাটিরাঙ্গার তবলছড়ির থৈলাপাড়ার উগাপ্রু মারমার ছেলে পাইসাথৈই মারমার সাথে । সে সংসারে দু’বছরের একটি মেয়েও আছে।
প্রায় ৬ মাস আগে প্রথম স্বামীর সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। দ্বিতীয় বিয়ে বসার ২-৩দিন পর প্রথম স্বামী ফোন করে তার ঘরে আবার ফিরে যেতে প্রস্তাব দেয় চোপাই মারমাকে। রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এ হত্যার ঘটনার সাথে চোপাই মারমার প্রথম স্বামী পাইসাথৈই মারমার জড়িত থাকার বিষয় সন্দেহ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, পাহাড়ের আঞ্চলিক কোন সংগঠনের সন্ত্রাসীদের দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটনানো হতে পারে।
একারণেই হয়তো ঐ সন্ত্রাসীদের ভয়ে নিহতের স্ত্রী বা শ্বশুরবাড়ির কেউ মুখ খুলছে না। তিনি জানান, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে নিহতের স্ত্রী চোপাই মারমা ও তার ছোট ভাই উক্যচিং মারমাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রধান আসামি পাইসাথৈই মারমাসহ অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে পুলিশ জোর তৎপরতা চালাচ্ছে।