parbattanews

রামগড়ে শ্যালকের হাতে দুলাভাই খুন, গ্রেফতার ২

ছবি: নিহত দিপক ঘোষ মুন্না

খাগড়াছড়ির রামগড়ে শ্যালকের হাতে দুলাভাই দিপক ঘোষ মুন্না (৩৮) নামের এক ব্যক্তি খুন হয়েছে। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) রামগড় পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের শ্মশানটিলা এলাকায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় পুলিশ শ্যালক সাগর ত্রিপুরা (২৫) ও তার বন্ধু আকাশ নন্দিকে (২৪) গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার সাগর রামগড় পৌরসভার সুকেন্দ্রাইপাড়ার তপন ত্রিপুরার ছেলে ও আকাশ বল্টুরামটিলার সুমন নন্দির ছেলে।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।

নিহতের বাবা রাখাল চন্দ্র ঘোষ জানান, সোমবার রাত আনুমানিক পৌনে ১২টায় রামগড় পৌরসভার শ্মাশানটিলা এলাকায় নিজের বাড়ির পাশে সাগর ত্রিপুরা ও তার বন্ধু আকাশ নন্দি, রুবেল, রিপ্রু চাই মারমা ও বাবুসহ আরও ৩ থেকে ৪ জন যুবক দিপক ঘোষ মুন্নার ওপর হামলা চালায়। তারা প্রথমে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি ও লাথি মেরে মুন্নাকে দুর্বল করে। এক পর্যায়ে লোহার রড দিয়ে মুন্নার মাথার পিছনে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ছেলের আর্তচিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হয়ে হামলাকারীদের হাত থেকে মুন্নাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে হামলাকারীরা তাকেও মারধর করে।

তিনি জানান, সাগর ত্রিপুরা মুন্নার শ্যালক। মুন্নার সাথে স্ত্রী কনিকা ত্রিপুরার দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। স্বামী-স্ত্রীর এ বিরোধ দুই পরিবারের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। দুজনের বিবাহ বিচ্ছেদ না হলেও দেড়-দুই বছর ধরে তারা আলাদা জীবন যাপন করছে। তাদের সংসারে ২টি ছেলে সন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ১নং ওর্য়াড কাউন্সিলর আব্দুল হক জানান, নিহত মুন্না ও তার ওপর হামলাকারী সকলেই মদ পান করে মাতাল অবস্থায় ছিল। পারিবারিক বিরোধের জের ধরে মুন্না ও তার শ্যালক সাগরের মধ্যে প্রথমে কথাকাটাকটি হয়। পরে তা মারামারি পর্যন্ত গড়ায় ।

তিনি জানান, খবর পেয়ে রাতেই তিনি ঘটনাস্থলে যান। ওই সময় হামলাকারীরা কেউ ছিল না। স্বজনরা মুন্নাকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার ডেকে এনে চিকিৎসা করায়। মাথায় গুরুতর জখমপ্রাপ্ত অচেতন মুন্নাকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে পরামর্শ দিলেও স্বজনরা তার কথা শুনেনি বলে তিনি জানান। পরে মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে মুন্নাকে তারা হসপিটালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহত মুন্নার মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে সাগর ত্রিপুরা ও আকাশ নন্দিকে গ্রেফতার করেছে।

রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত সুপার মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, সকালে খবর পাওয়ার পরই থানার ওসিসহ তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতা চলছে।

থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসাতালে ময়নাতদন্তের পর মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের পিতা রাখাল চন্দ্র ঘোষ দীপক ঘোষ মুন্নার শ্যালক সাগর ত্রিপুরাসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অপর ৩ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলেও তিনি জানান।

Exit mobile version