parbattanews

রামগড়ে হালদা নদীর উৎপত্তিস্থল পরিদর্শনে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি

বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার প্রাক প্রস্তুতি হিসেবে রামগড়ের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হালদা নদী উৎপত্তিস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল।

শনিবার(১৫ ফেব্রুয়ারি) মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুবোল বোস মনি’র নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা ছোট বেলছড়ির হাসুকপাড়া নামক স্থানে হালদার উৎপত্তিস্থল ঘুরে দেখেন। পাহাড়ি টিলার ঝিঁরি থেকে সরু ঝর্ণা থেকে হালদার জলধারা প্রবাহিত হয়। এ জলধারা ক্রমশ: আকঁবাঁকা সরু ছড়া, খাল ও নদীতে পরিণত হয়।

এটি খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারি উপজেলার মধ্যদিয়ে কর্ণফুলী নদীতে মিলিত হয়েছে। প্রতিনিধিদলটি উঁচু পাহাড়ের পাদদেশে নদীর উৎপত্তিস্থলে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করেন। তারা স্থানীয় লোকজনদের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যাদি সংগ্রহ করেন।

সরেজমিনে পরিদর্শনকালে অতিরিক্ত সচিব সুবোল বোস মনি উৎপত্তিস্থলের অদূরে হালদার জলপ্রবাহে স্থানীয় লোকজনদের তৈরি মাটির বাঁধ সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনকে নির্দেশ দেন। পরিদর্শন শেষে স্থানীয় গ্রামবাসিদের সাথে অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময় করেন প্রতিনিধিদল।

পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক(অর্থ ও প্রশাসন) ড. খলিলুর রহমান, মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: আনিসুর রহমান, খাগড়াছড়ি জেলা মৎস্য বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ড. মঈন উদ্দিন আহমেদ, মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিএম শাহীনুর রহমান, রামগড় উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত)মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন, পাতাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিন্দ্র ত্রিপুরা।

দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জাতিরজনক শেখ মুজিবুর রহমনের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার এ সিদ্ধান্তের অনুমোদনও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নদীকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতির দাবি দীর্ঘদিনের।

বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার সরকারি সিদ্ধান্ত হওয়ায় হালদা নিয়ে নতুন করে তোড়জোর শুরু হয়। অপার জীব বৈচিত্র ও মৎস্য সম্পদে ভরপুর এ নদী জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র রুই জাতীয় মাছের(রুই, কাতলা, মৃগেল,কালিগনি) প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র।

এছাড়া বিশ্বের একমাত্র এই জোয়ারভাটার নদী থেকে সরাসরি রুই জাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। নদীটির ঐতিহ্য ও অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আগামী ১৭ মার্চ জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা দেয়া হবে হালদাকে।

Exit mobile version