রামগড়-সাব্রুম স্থলবন্দর চালু ২০২৩ সালে
বহু প্রত্যাশিত রামগড়-সাব্রুম স্থলবন্দরের কার্যক্রম আগামী ২০২৩ সালের জুলাই মাসে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের। এ পরিকল্পনা সামনে রেখে রামগড়ে স্থলবন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের প্রাথমিক কাজ শুরু করা হয়েছে। এ স্থলবন্দরটি হবে বাংলাদেশের ১৫তম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম স্থলবন্দর। এটি চালু হলে বংলাদেশ ভারত দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্য, পর্যটনসহ সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, এ স্থলবন্দর চালুর লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী ফেনীনদীর উপর রামগড়-সাব্রুম সংযোগ স্থাপনকারী মৈত্রী সেতু-১ এর নির্মাণ কাজও দ্রুত এগিয়ে চলেছে। চলিত বছরের মে-জুন মাস নাগাদ সেতুর কাজ পুরোপুরি সমাপ্ত হওয়ার কথা। ভারত সরকার সেতুটি নির্মাণ করছে। এদিকে, এ স্থলবন্দর চালুর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত রামগড়-বারৈয়ারহাট সড়কে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা’র অর্থায়নে বেশ কয়েকটি ছোট বড় ব্রিজের নির্মাণ কাজও জোরেশোরে চলছে।
এছাড়া বন্দরে চলাচলকারি পণ্যবাহী ভারী যানবাহনের ওজন পরিমাপের জন্য রামগড়ের ফেনীরকূল নামক স্থানে সড়কে ওজন পরিমাপক যন্ত্র (স্কেল) স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করা ভূমি উন্নয়নের কাজও শুরু করেছে জাইকা। ব্রিজের কাজ শেষ হলে সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার কাজও করবে জাপানের এ উন্নয়ন সংস্থাটি।
এদিকে, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ব ব্যাংকের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার(২৭ ফেব্রুয়ারি) রামগড়ের মহামুনি এলাকায় স্থলবন্দর স্থাপনের নির্ধারিত স্থান ও ফেনী নদীর উপর নির্মাণাধীন মৈত্রী সেতু সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরে উপজেলা মিলনায়তনে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আয়াজনে স্থলবন্দর নির্মাণে পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রকল্প-১ এর প্রকল্প পরিচালক(যুগ্ম সচিব) মো. হাবিবুর রহমান জানান, আগামী ২০২৩ সালের জুলাই মাসে রামগড়-সাব্রুম স্থলবন্দরটি চালু করার পরিকল্পন রয়েছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থলবন্দরের জন্য রামগড়ে ওয়ার হাউজ, পার্কিং এরিয়া, লেবার শেড, স্ট্যাক এরিয়া, চেক পোস্ট, অভ্যন্তরিন রাস্তাসহ প্রয়োজনীয় সকল অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব স্থাপনার জন্য ১০ একর জায়গা অধিগ্রহণ করবে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ঐ জায়গাও নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি বিধান অনুযায়ী ভূমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করে জায়গাগুলো অধিগ্রহণের পরই শুরু করা হবে অবকাঠামোর কাজ। মতবিনিময় সভায় অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত ভূমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয়দের বিরোধ দ্রুততার সাথে মীমাংসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত ভূমির মালিকদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পেশ করা হয়।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রকল্প পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, রামগড়ে স্থলবন্দরটি চালু হলে এ বন্দর দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কম সময়ে ও কম খরচে ভারতের ত্রিপুরার সাথে বাণিজ্য এবং দুদেশের মানুষের চলাচল সহজ ও সুলভ হবে। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশ্ব ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মি. ক্যানান ডব্লিও রেপ ছাড়াও বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা , রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ ত্রিপুরা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ. ন. ম বদরুদ্দোজা, পৌরসভার প্যানেল মেয়র আহসান উল্লাহ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুজ্জামানসহ স্থানীয় বিভিন্ন পেশাজীবী ও স্থলবন্দর স্থাপনের নির্ধারিত মহামুনি এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।