বিয়ের পিড়িতে বসা হলো না রিমঝিমের


বিয়ের পিড়িতে বসা হলো না রিমঝিমের। রামুর যাত্রীবাহী বাস-ক্যাভার্ড ভ্যান দুর্ঘটনা কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ। চিরতরে হারিয়ে গেছে দুটি হৃদয় ও দুটি পরিবারকেও একত্রিত করার স্বপ্ন।
২২ বছরের এই তরুণী রিমঝিমের বাড়ি রামু উপজেলার রাজারকুলে। আগামী ৬ জুলাই বিয়ের পিড়িতে বসার কথা ছিল রিমঝিমের। বিয়ের আকদ সম্পন্ন হয় গত ৬ জুন ২০২৫। রিমঝিমের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছলে স্বজন ও প্রতিবেশিদের আহাজারিতে মুহূর্তেই ভারী হয়ে ওঠে রাজারকুল বাতাস।
রিমঝিমের স্বজন আইনজীবি শিপ্ত বড়ুয়া পার্বত্যনিউজকে জানান, চট্টগ্রামের একটি এনজিওতে চাকরি করতেন রিমঝিম। ঈদের ছুটিতে স্বজনদের কাছে বেড়াতে এসেছিলেন তিনি। গেল ৬ জুন আকদ হয়েছে তাঁর। ধুমধাম করে বিয়ে হবার কথা ছিল ৬ জুলাই। দুর্ঘটনায় সব শেষ হয়ে গেল। শোকে কাতর রিমঝিমের পরিবার, প্রতিবেশি, স্বজন- সকলেই।
সোমবার (১৬ জুন) সকাল ৮ টায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের রামু রশিদনগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এঘটনায় রিমঝিমসহ নিহত হন তিনজন। বাকি দুজন বাবা-ছেলে। তাদের ঘটনাটি আরও করুন। ছেলেকে হেফজখানায় দিতে যাচ্ছিলেন বাবা। পথেই বাবা-ছেলের এমন মৃত্যু মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে স্বজন ও এলাকাবাসীর। বাবা মায়ের স্বপ্ন ছিল তাদের ছেলে পবিত্র কুরআনের হাফেজ হবেন। সড়ক দুর্ঘটনায় বাবাকে সাথে নিয়ে পরপারে চলে গেলেন কুরআনের এই পাখি।
অন্যদিকে দুর্ঘটনায় নিহত হাবিব উল্লাহর ভাই রহিম জানান, তাঁর ভাই পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তবে আজ তিনি ব্যবসার কাজে বের হননি। ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রামের হেফজখানায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে দুর্ঘটনায় বাবা ছেলে দুজনই নিহত হন।
রামু হাইওয়ে পুলিশের ওসি নাছির উদ্দিন বলেন, কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী পুরবী পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস এবং ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী ক্যাভার্ড ভ্যান রামুর রশিদনগর এলাকায় পৌছালে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীবাহী বাস সড়ক থেকে খাদে পড়ে যায় আর ক্যাভার্ড ভ্যানটি গাছের সঙ্গে আটকে যায়। ঘটনাস্থলে যাত্রীবাহী বাসের ৩ যাত্রী নিহত। আর ৭ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওসি আরও বলেন, নিহতরা হলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের হাবিব উল্লাহ, তার শিশু সন্তান গিয়াস উদ্দিন ও রামুর পূর্ব রাজারকুলের রিমঝিম বড়ুয়া। নিহত এবং আহতরা সবাই বাসের যাত্রী। ঘটনার পরপরই বাস ও ক্যাভার্ড ভ্যানের চালকরা পালিয়ে যায়। দুর্ঘটনাস্থল থেকে গাড়ি দুটি উদ্ধারে কাজ চলছে।