রামুর চাকমারকুলে বসত বাড়িতে ভাংচুর-লুটপাট


রামুর চাকমারকুলে একটি বসতঘরে সন্ত্রাসী কায়দায় ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা বাড়িটির ৮টি কক্ষে ভাংচুর করে বিপুল মালামাল লুট করে। সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় রামু উপজেলার চাকমারকুল ইউনিয়নের কলঘর বাজার সংলগ্ন ছালেহ আহমদ পাড়ার মৃত মো. কালুর ছেলে প্রবাসী শফি উল্লাহর বাড়িতে এ হামলা-লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার খবর পেয়ে রামু থানার ওসি (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এবং চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার ঘটনাস্থলে যান।
ভাংচুর করা বাড়িটির গৃহকর্তা শফি উল্লাহ জানিয়েছেন, ২৫/৩০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আকস্মিকভাবে তার বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর শুরু করে। হামলাকারীরা বাড়ির দরজা এবং জানালার গ্রিল ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে বাড়ির সদস্যদের প্রাণনাশের ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি কক্ষে জিম্মি করে ফেলে। এসময় তারা বাড়ির ১ম ও ২য় তলায় ৮টি কক্ষে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। ভাংচুর শেষে হামলাকারীরা আলমিরা ও বিভিন্ন আসবাবপত্র তছনছ করে বিপুল স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, মোবাইল সেটসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তাঁর ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরো জানিয়েছেন, চাকমারকুল ইউনিয়নের উত্তর ফারিকুল গ্রামের গোলাম রহমানের ছেলে মো. সুজন, মো. বাবু (১৭), রুবেল হোসেনের ছেলে মো. জুয়েল, মফিজুর রহমানের ছেলে চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী শাহাদাৎ হোসেন মারুফ, উখিয়া কোট বাজার এলাকার ফয়সালসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে।
গৃহকর্তা শফি উল্লাহর ভাগিনা অলি আহমদ জানিয়েছেন, চাকমারকুল ইউনিয়নের উত্তর ফারিকুল গ্রামের গোলাম রহমানের ছেলে মো. সুজন সহ একটি চক্র তার স্বত্ত্বদখলীয় পুকুর ও ধানি জমি দীর্ঘদিন জবর-দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলো। জবর-দখলের বাধা দেয়ায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি সুজন ও তার ভাই বাবু, একই এলাকার জুয়েল, শাহাদাৎ হোসেন মারুপ তাকে মারধর করলে তিনি রামু থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। থানায় উভয় পক্ষকে ডাকা হলেও হামলাকারীরা থানায় না গিয়ে সোমবার তার (অলি উল্লাহ) মামা শফি উল্লাহর বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ব্যাপারে অনেক চেষ্টা করেও হামলায় অভিযুক্তদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার জানিয়েছেন, হামলাকারীদের সাথে শফি উল্লাহর ভাগিনা অলি আহমদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ ছিলো। থানায় এ নিয়ে অভিযোগও সমাধানের পর্যায়ে ছিলো বলে শুনেছি। কিন্তু একটি পক্ষ থানায় না গিয়ে অলি উল্লাহকে মারধরের চেষ্টা চালায়। অলি উল্লাহ প্রাণ বাঁচাতে মামা শফি উল্লাহর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে সেখানে হামলা-ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
রামু থানার ওসি (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, হামলা ও ভাংচুরের এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা লিখিত অভিযোগ দিলে মামলা নেয়া হবে। তিনি আরো জানান, দুটি পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিলো। একটি পক্ষ থানায় অভিযোগ দিয়েছিলো। দু’পক্ষকে থানায় ডাকা হলেও একটি পক্ষ আসেনি।