রামুর দুর্গম জনপদে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ‘গরীবের সুপার শপ’

fec-image

গরীবের সুপার শপ, এই বিশেষ বাজারে প্রতি কেজি চাল ১ টাকা, প্রতি কেজি ডাল ২ টাকা, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ৪ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ২ টাকা, প্রতি কেজি আটা ২ টাকা, প্রতি কেজি সুজি ১ টাকা, প্রতিটি লাউ ও মিষ্টি কুমড়া ১ টাকা, ডিম এক ডজন ২ টাকা, মুরগী ৪ টাকা, বড় মাছ প্রতিটি ৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এক টাকায় মিলেছে নতুন পোশাক কেনারও সুযোগ। যেখানে ছিলো লুঙ্গি, থামি, শার্ট, টি শার্ট, ফ্রক, স্যান্ডেলসহ নানা পণ্য। এভাবে নামমাত্র মূল্যে কাপড়সহ প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পেয়ে উৎফুল্ল সুবিধাবঞ্চিত ৬শ পরিবার। প্রতিটি পরিবার সর্বোচ্চ দশ টাকার পণ্য এবং তিন টাকার পোশাক কেনার সুযোগ পেয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ১৬শ থেকে ১৮শ টাকা।

বৌদ্ধধর্মালম্বীদের আসন্ন প্রবারণা উৎসবে অনেক দরিদ্র পরিবারে নেই উৎসবের আমেজ। তাদের পাশে দাড়াতেই বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের চ্যারিটি প্রজেক্ট ‘গরীবের সুপার শপ’।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) কক্সবাজারের রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের দূর্গম জনপদ বৈদ্যপাড়া গ্রামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সম্প্রীতি অনাথালয় খেলার মাঠে উৎসবমুখর কেনাকাটায় মুখরিত হয়ে উঠে ব্যতিক্রমী এ গরীবের সুপার শপ।

সকাল ১০টায় গরীবের সুপার শপ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন-রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফা।

তিনি বলেন- বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এ এলাকায় এসে সেবার অনন্য নজির স্থাপন করেছে। এ কার্যক্রমের ফলে এখানকার দরিদ্র বৌদ্ধ সম্প্রদায় উৎসব-আমেজে প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করবে। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের হেড অব কমিউনিকেশন সালমান খান ইয়াসিন জানালেন- আর কদিন পরেই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা পালিত হবে। বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সুবিধাবঞ্চিত ও নিম্ন আয়ের মানুষ খুব দুর্দশার মধ্যে আছে। এর ছাপ পড়েছে এখানকার সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলোতে। তাদের উৎসবকে রাঙিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে রামুর দুর্গম এ অঞ্চলটিতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন গরীবের সুপার শপ আয়োজন করেছে।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক মোহাম্মদ মোবারক বাবু ও হ্লাতুন সিং জানান- আয়োজনটি বৈদ্যপাড়া গ্রামে হলেও দূরের এলাকা থেকে দুস্থ পরিবারগুলো এসে কেনাকাটা করার সুযোগ পেয়েছে। এজন্য যাতায়াত সুবিধা দিতে বিদ্যানন্দের পক্ষ থেকে বিশেষ যাতায়াত সার্ভিস চালু করা হয়। এলাকা গুলো হচ্ছে ক্রোক্ষং, নাইক্ষ্যংছড়ি, গর্জনিয়া, বাইশারী, ঈদগড়। এতে ৬শ পরিবার সেবা পেয়েছে।

তারা আরো জানান- বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবীরা ঘরে ঘরে জরিপ করে টোকেন প্রদান করেন। যা দেখিয়ে এ সুপার শপে পণ্য কেনার সুবিধা দেয়া হয়েছে। মূলত পণ্য বাছাই করার স্বাধীনতা দেয়ার পাশাপাশি দরিদ্র মানুষকে উৎসবের কেনাকাটার অভিজ্ঞতা দিতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এমন উদ্যোহ নিয়েছে। কেবল প্রবারনা পূর্ণিমা নয়, মুসলিমদের ধর্মীয় উৎসব ঈদ এবং চলমান দুর্গা পূজা উপলক্ষ্যেও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এমন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন