parbattanews

রোহিঙ্গাদের কারণে জীবন-জীবিকার সংকটে স্থানীয়রা

মিয়ানমারে সংঘঠিত জাতিগত সংঘাত ও প্রাণ রক্ষায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা এক বছরের বেশি সময় কক্সবাজারের আশ্রয় নিয়ে অবস্থান করছে। রোহিঙ্গাদের কারণে পরিবেশ বিপর্যয়সহ নানা সমস্যায় এমনিতেই জর্জরিত স্থানীয়রা। এর উপর  কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে খাদ্যসংকট। জীবন-জীবিকার এক মহাসংকটেই রয়েছে স্থানীয় জনগণ।

সম্প্রতি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে শুধু রোহিঙ্গাদের জন্যই নয়, কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য আন্তর্জাতিক খাদ্যসহায়তা দরকার।  প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বের ৪১টি দেশ খাদ্যসংকটে আছে। এসব দেশের জন্য আন্তর্জাতিক খাদ্যসহায়তা দরকার। ওই তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে ৩১টি আফ্রিকার, ৮টি এশিয়ার ও ২টি দক্ষিণ আমেরিকার দেশ। আফ্রিকার মধ্যে রয়েছে উগান্ডা, বুরকিনা ফাসো ও কঙ্গোর মতো দেশগুলো।

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মিয়ানমারের নাম রয়েছে। এই দেশগুলোতেও অধিকাংশ খাদ্যসংকট উৎপাদনের ঘাটতির কারণে হয়নি। মূলত অভ্যন্তরীণ সংঘাত ও যুদ্ধের কারণে দেশগুলোর সুনির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকায় ওই খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে।

এফএওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে ৯ লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের খাদ্যসহ অন্যান্য সহায়তা দিচ্ছে। কিন্তু সেখানে যে সাড়ে ৪ লাখ স্থানীয় বাংলাদেশি রয়েছে, তারা কোনো আন্তর্জাতিক সহায়তা পাচ্ছে না। কিন্তু রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর কারণে স্থানীয়ভাবে খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়া, কর্মসংস্থান কমে যাওয়াসহ নানা সংকট দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে ত্রাণ অধিদপ্তরের পরিচালক (ত্রাণ) মো. ইফতেখারুল ইসলাম জানান, ‘রোহিঙ্গাদের খাদ্যসহায়তার বিষয়টি জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) থেকে দেখা হয়। তবে স্থানীয় বাংলাদেশিদের সহায়তার প্রয়োজন হলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের চাহিদাপত্রের ভিত্তিতে সহায়তা দিয়ে থাকি। সেখানে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমেও কিছু নিয়মিত সহায়তা দেওয়া হয়।’

বিশ্বব্যাংক এবং বেসরকারি সংস্থা কোস্ট ট্রাস্টের দুটি গবেষণায় রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারে স্থানীয় জনগোষ্ঠী আর্থিক চাপে পড়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, রোহিঙ্গারা আসার পর মাছ ধরা, কৃষিকাজ ও বন থেকে সম্পদ আহরণের পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে।

Exit mobile version