রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

fec-image

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলা সংঘর্ষের ফলে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে কোন ধরণের হুমকি নেই। সেদেশের সেনারা পালিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। আর্ন্তজাতিক নিয়ম মেনে তাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। গেলো কয়েকদিনে আরও ১৩৮ জন এসেছে। এদের মধ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিনজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা রয়েছে। তাদেরকেও নিয়ম মেনে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হবে।

রবিবার (১২ মে) সন্ধ্যায় কক্সবাজারে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় সহায়ী কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে অংশ নিতে কক্সবাজারে এসেছেন মন্ত্রী।

তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে মাদক কারবার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। মিয়ানমার বার বার বলে আসছে রোহিঙ্গাদের তারা ফিরিয়ে নেবে। কিন্তু গত ৭ বছরে কার্যরত একজন রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়ে যায়নি।

বৈঠক শেষে সাথে থাকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় সহায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফিরে যেতে চায়। তারা তাদের দেশে নিরাপত্তাও চায়। বাংলাদেশ সরকারও রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন কামনা করেন। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাশন নিয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে।

এর আগে দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় সহায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ।

ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় সহায়ী কমিটির সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসেছেন। জাতিসংঘের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন। রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতাদের সাথে কথা বলেছেন। রোহিঙ্গা নেতারা তাদের সমস্যার কথা দেশে ফিরে যাওয়ার আগ্রহের কথা এবং তাদের দেশে নিরাপত্তার কথা বলেছেন।

এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় সহায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ সকাল সাড়ে দশটার দিকে কমিটির সভাপতি সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মোমেনের নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান।

সংসদীয় কমিটি ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্ধিত অংশে অবস্থিত জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পরিচালিত ই-ভাউচার সেন্টার পরিদর্শন করেন। এর পাশাপাশি ক্যাম্পে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা পরিচালিত বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন রোহিঙ্গা শিশুদের লার্নিং সেন্টার ও মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

দুপুরে ৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেন। পরে সংসদীয় কমিটি ঘুমধুমে অবস্থিত ট্রানজিট ক্যাম্প এবং ১৮ নম্বর ক্যাম্পে অবস্থিত রোহিঙ্গা কালচারাল সেন্টার পরিদর্শন করেন।

এসময় রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতারা বলেছেন, রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরতে টেকসই প্রত্যাবাসন চায়। মিয়ানমারে যুদ্ধরত আরাকান আর্মিও রোহিঙ্গাদের শত্রু মনে করে। বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মিয়ানমার সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরার নতুন দুর্ভিসন্ধিমূলক ফন্দি। পরিদর্শনকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় সহায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: প্রত্যাবাসন, রোহিঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন