parbattanews

রোহিঙ্গারা বলছে আশ্রয়ের নাম বাংলাদেশে

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশেই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের ঘরবাড়ি। কেড়ে নেওয়া হচ্ছে সহায়-সম্পদ। তাদের হত্যা করা হচ্ছে নির্মমভাবে। আর এমনই অবস্থায় সীমান্তের এপারে বাংলাদেশ দিয়েছে তাদের আশ্রয়। দিয়েছে মাথা গোজার ঠাঁই। বাংলাদেশের এই সহযোগিতা পেয়ে আশ্রিত রোহিঙ্গা নাগরিকেরা বলছেন, আশ্রয়ের নাম বাংলাদেশ। যেখানে থাকা, খাওয়া, নিরাপত্তা, চিকিৎসা সেবা সহ রয়েছে নানা সুযোগ-সুবিধা।

কক্সবাজারে উখিয়িা-টেকনাফে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য প্রতিদিন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোননা কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান ত্রান নিয়ে ছুটে আসছে। নিজ দেশের শত সীমাবদ্ধতা শর্তেও বাংলাদেশ তাদের মমতার আচল বিছিয়ে দিয়েছে। উখিয়া এবং টেকনাফের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়া এসব রোহিঙ্গাদের সরকারের নির্ধারীত অস্থায়ী ক্যাম্প বালুখালীতে নিয়ে আসা হচ্ছে।

জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক কর্মসূচির পক্ষ থেকে দৈনিক ১ লক্ষ ২০ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিকদের খাবার প্রদান করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের হিসাব অনুযায়ী এ পর্যন্ত ৯ শত মেট্রিক টন চাল সহায়তা পাওয়া গেছে। তাদের চিকিৎসা সেবার জন্য রয়েছে মেডিকেল টিম। দেয়া হচ্ছে সেনিটেশন সেবা, বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুৎ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ২২টি কেন্দ্রে রোহিঙ্গাদের ত্রান সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের জন্য মেডিকেল টিম খোলা হয়েছে ৪৫টি। তার মধ্যে ২০টি সরকারি, ২৫টি বেসরকারি। এছাড়া মোবাইল টিম সহ ৪০জন চিকিৎসক রয়েছে। ইতিমধ্যে ৮ হাজারেরও বেশি সেনিটেশন ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাজ চলছে আরো ৯ হাজারের। চাপকল দেওয়া হয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি। প্রক্রিয়াদীন রয়েছে আরো প্রায় ৫ হাজারের। বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে প্রায় ১০ কিলোমিটার জায়গায়। উন্নত করা হচ্ছে সড়ক ব্যবস্থাপনা। এতসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে মুগ্ধ অস্থায়ীভাবে অবস্থান করা রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গাদের ত্রান বিতরন সহ নানা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে সেনাবাহিনী। আর সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণেই শৃঙ্খলার মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে ত্রান।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর দশ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার মেজর জেনারেল মাকছুদুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরনে সেনাবাহিনীর ৪টি ডিভিশন কাজ করছে। এছাড়া তাদের নিয়ন্ত্রণেই ২২টি কেন্দ্রে দেওয়া হচ্ছে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। শুরু তাই নয় সড়ক তৈরি ও সেল্টার নির্মাণসহ সার্বিক সহযোগী করছে সেনাবাহিনী।

অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা জোরদার রেখেছে প্রশাসন। তাদের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। আর বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারী।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন জানান, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা প্রদানে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সব মিলে রোহিঙ্গাদের অবস্থান স্থলের আইন-শৃঙ্খলা ভাল রয়েছে।

Exit mobile version