রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপকে সমর্থন করে না বেইজিং: চীনা রাষ্ট্রদূত

fec-image

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে মিয়ানমারের সামরিক কমান্ডার-ইন-চিফ সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের সাথে বৈঠককালে চীনা রাষ্ট্রদূত চেন হাই বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা সঙ্কটের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও চীন মিয়ানমারকেই সমর্থন করবে। খবর, দ্যা ইরাবতী ডটকম।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটি ওয়েবসাইটের সূত্রে দ্যা ইরাবতী ডটকমের খবরে বলা হয়েছে, কমান্ডার-ইন-চিফের কার্যালয় চেন ও সেন-জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, আলোচনায় চীনা রাষ্ট্রদূত তিনটি মূল বিষয় তুলে ধরেছেন: ১. রোহিঙ্গা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত বিষয়ে বেইজিং মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ স্বীকার করে না। ২. উত্তর শান স্টেট এবং মান্দালয় অঞ্চলের গ্যারিসন শহর পাইয়েন ওউ লুইনে সাম্প্রতিক সহিংস হামলার তীব্র নিন্দা জানায় চীন। ৩. জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির সাথে মিয়ানমারের শান্তি প্রক্রিয়া এবং শান্তি সংলাপের পরিস্থিতি উন্নতির সম্ভাব্য উপায়গুলিকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

উল্লেখ্য, পাইয়ান ওউ লুইন ও নাউং চ টাউনশিপের পাঁচটি পৃথক স্থানে তিনটি জাতিগত সশস্ত্র দল- তা’আং ন্যাশনাল লিভারেশন আর্মি, আরাকান আর্মি এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি -এর যৌথ আক্রমণের ঘটনায় গত ১৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী, পুলিশ অফিসার এবং বেসামরিক নাগরিকসহ ১৫ নিহত হয়েছে। তিনটি বিদ্রোহী গ্রুপের ‘আক্রমণাত্মক এবং উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে যুদ্ধরত দলগুলির মধ্যে চলমান মারাত্মক সংঘর্ষের ব্যাপারে ১৯ আগস্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার চীনা রাষ্ট্রদূত চেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধান সেন-জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে ব্যক্তিগতভাবে বেজিংয়ের সেই কূটনৈতিক বার্তা দেওয়ার জন্যই নেপিডোতে এসেছিলেন।

এদিকে, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশ থেকে পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপে প্রত্যাবাসন করার কথা ছিল। যদি তাদের প্রত্যাবর্তন নির্ধারিত অনুসারে এগিয়ে যায় তবে দেশগুলির মধ্যে চুক্তির আওতায় এটাই প্রথম এই প্রত্যাবাসন হবে।২০১৭ সালে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দমন অভিযানের পরে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়েছে।

তবে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পরিকল্পনাটি বিলম্বিত হতে পারে, কারণ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লু) এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল (এআই) মিয়ানমারের পক্ষ থেকে “নিরাপদ, স্বেচ্ছাসেবক ও মর্যাদাপূর্ণ” প্রত্যাবর্তনের অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের পরিকল্পনা স্থগিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। বুধবার (২১ আগস্ট) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ নিউ ইয়র্কে এই পরিকল্পনার বিষয়ে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে।

সূত্র: দ্যা ইরাবতী

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন