রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো করোনা ভাইরাস সংক্রমণে ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে

fec-image

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি উন্নয়নকর্মীদের অবাধ যাতায়াত আর ব্যাপক ঘনত্বের কারণে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে বলে জানিয়েছেন অভিজ্ঞমহল। এনিয়ে উৎকণ্ঠা বাড়ছে স্থানীয়দের মাঝেও।

তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রোহিঙ্গাদের সচেতন করা হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।

কোনো রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই এক ক্যাম্প থেকে অন্য ক্যাম্পে চলাচল করছে কক্সবাজারের উখিয়া এবং টেকনাফের আশ্রয় ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা। সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই ত্রাণ সংগ্রহ করছেন তারা। আবার করোনা ভাইরাসের ব্যাপারে কোনো ধারণাই নেই তাদের। সেই সঙ্গে রয়েছে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় কর্মরত বিদেশিদের অবাধ যাতায়াত।

মোচনীতে গ্যাস নিতে আসা মো. হোছন (৪২) বলেন, গ্যাস নিতে সকালে চাপটা বেশি থাকে। সকালে ১০০ থেকে ১২০ জন মত রোহিঙ্গা একসাথে গ্যাস সংগ্রহ করে। বলতে গেলে গ্যাস নিতে রোহিঙ্গারা আসতেও থাকে আর গ্যাস দিতেও থাকে। ভাইরাসের নাম শুনেছি, ক্যাম্পে শুধু হাত ধোঁয়ার জন্য সাবান দিয়েছে, এছাড়া আর কিছুই দেয়নি।

লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ছমুদা বেগম বলেন, আল্লাহর হুকুম হলে করোনা ভাইরাস হলে হবে, আল্লাহর হুকুম না হলে করোনা ভাইরাস হবে না। আর মুখে মাস্ক এবং হাতে ও পায়ে গ্ল্যাভস নেয়ার টাকা থাকতে তো হবে, তাহলে তো দিতে পারবো। টাকা না থাকলে কিভাবে কিনবো আর কিভাবে দিব?

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন- ক্যাম্পে ১১ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থান। তারা কোনভাবেই ক্যাম্পের বাইরে যেতে পারছে না অনুমতি ছাড়া। ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা বের হতে না পারলেও বিদেশি এবং স্থানীয়রা প্রবেশ করছে। যার কারণে আমরা অনেক আতংকে আছি। কারণ তাদের কাছ থেকে আমাদের রোহিঙ্গা কমিউনিটিতে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে তার জন্য ভয়ে আছি। করোনা ভাইরাস পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। বাকি আছে মাত্র শুধু রোহিঙ্গা ক্যাম্প। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেহেতু ঘেষাঘেষি মানুষ, সেখানে যদি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে তাহলে বেশি মানুষ মারা যাবে সেজন্য বেশি ভয়ে আছি।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, সরকারের কাছে অনুরোধ, রোহিঙ্গাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করার। রোহিঙ্গাদের মধ্যে কোনো নিয়ম শৃঙ্খলা নেই। এদের মধ্যে করোনা বিষয়ে কোনো সচেতনতাও নেই।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা জানালেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতে জনসমাগম না হয় এজন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, তাদের অতিরিক্ত জনসমাগম করতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় জিনিস ব্যতীত অন্য কিছু বিতরণের ক্ষেত্রে ক্যাম্পগুলোকে নিষেধ করা হয়েছে। গত সপ্তাহে ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা এক রোহিঙ্গা পরিবারের ৪ সদস্যকে ইউএনএইচসিআরের ট্রানজিট ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস, ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ, রোহিঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন