রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলি, দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় মুখে গুলিবিদ্ধ এনজিওকর্মী
রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা ও আরএসওর দুই গ্রুপের সংর্ঘষে গোলাগুলিতে অস্থির রোহিঙ্গা ক্যাম্প।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দিনভর উখিয়ার ১৪ এবং ১৫ নং ক্যাম্পে দুই পক্ষের ব্যাপক গোলাগুলি চলে, এতে বাংলাদেশীসহ গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
তবে ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত এপিবিএন তিনজনের গুলিবিদ্ধের খবর নিশ্চিত করেছে, তাঁদের মধ্যে ‘আমান’ এনজিওর এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট এনজিওসূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকেই ক্যাস্প-১৫ এবং ১৪ তে গোলাগুলি চলছিলো, এর মধ্যে এনজিও আমান’র কর্মকর্তা বেলাল ক্যাম্প-১৫ তে তাঁদের পরিচালিত একটি লার্নিং সেন্টারে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। খাবার খাওয়ার সময় লার্নিং সেন্টারের বেঁড়াবেধ করে গুলির একটি খোসা বেলালের মুখে এসে লাগে। পরে তাঁর সহকর্মীরা উদ্ধার করে ক্যাম্পের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বেলালকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
বেলালের বাড়ি উখিয়ার বালুখালী এলাকায়। তাঁর বাবার নাম ওমর হাকিম। তিনি আমান নামক এনজিওর শিক্ষা প্রকল্পে কর্মরত বলে জানা গেছে।
৮ এপিবিএনের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজ) আমির জাফর, বিষয়টি নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার বিকেলে টিটিএন-কে জানান, ক্যাম্প ১৪ এবং ১৫ তে রোহিঙ্গাদের দুই সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা এবং আরএসও’র গোলাগুলিতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন, এর মধ্যে একজন বাংলাদেশীও আছেন।
ঘটনাস্থলে এপিবিএন সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আমির জাফর।
অন্যদিকে ক্যাম্পের একাধিক সূত্র বলছে, ৫ আগস্টের পর থেকে ক্যাম্পে আরসা নতুন করে সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করছে, বিভিন্ন ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ নিতে আরসা প্রায় সময় আরএসওর সাথে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে দুই পক্ষই ভারি অস্ত্র ব্যবহার করে গোলাগুলি করেছে ক্যাম্পে।এতে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
এদিকে গোলাগুলির বিষয়ে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন টিটিএন-কে জানান, ক্যাম্পে গোলাগুলির ঘটনায় বাংলাদেশী একজন আহত হয়েছেন।
তাছাড়া ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বসবাস করা বাংলাদেশী বাসিন্দারা বেশ আতঙ্কে আছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, গোলাগুলির কারণে আতঙ্কিত স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছে, তাছাড়া তাঁরা ঘর থেকে জরুরী কাজ ছাড়া বের হচ্ছেননা বলেও জানিয়েছেন।
রোহিঙ্গাদের দুই সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা এবং আরএসওর সংঘর্ষ নতুন নয়, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কড়া তৎপরতায় আরসা ক্যাম্পে কিছুটা নিস্কৃয় ছিলো, গত কয়েকমাস ধরে ক্যাম্পে আরসা আবারো তাঁদের তৎপরতা বাড়িয়েছে, ফলে রোহিঙ্গাদের মাঝেও নতুন করে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা।