রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের ইন্টারনেট সেবা চালু

fec-image

কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় অবস্থিত শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে আবারও ইন্টারনেট সেবা চালু করেছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পগুলোতে ইন্টারনেট পরিসেবা চালু হয়। গত বছর ঠিক এই দিন ২৮ আগস্ট শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

মোবাইল নেটওয়ার্কের থ্রিজি ফোর-জি সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হলেও মোবাইলের টু জি সার্ভিস চালু ছিল। তবে মোবাইল নেটওয়ার্ক দুর্বল হয়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শরণার্থী ক্যাম্পে রোহিঙ্গা অপারেশনাল কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের কমিশনার যুগ্ম সচিব মাহবুব আলম তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আবেদন এবং কমিশন অফিসের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার শরণার্থী ক্যাম্পে ইন্টারনেট সার্ভিস আবারও চালু করেছে।

জানা গেছে, গত বছর ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের দুই বছর পূর্তির দিনে ক্যাম্পে লাখো রোহিঙ্গা সমাবেশ করে। রোহিঙ্গাদের এই সমাবেশ নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন সংশ্লিষ্ট এবং কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনেও তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। রোহিঙ্গা সমাবেশের অনুমতি দেওয়া না দেওয়া নিয়ে শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন অফিস এবং জেলা প্রশাসন একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যাবাসন অফিসের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে নেয়। তখন রোহিঙ্গাদের বিশাল সমাবেশের জন্য ইন্টারনেট পরিসেবাকে কেউ কেউ দায়ী করেছিল।

পরে সরকার গত বছরের ২৮ আগস্ট পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্প অর্থাৎ ৩৪টি ক্যাম্পেই ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ করে দেয়।

ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে গেলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িতদের শতাধিক আন্তর্জাতিক ও দেশীয় সংস্থা বিপাকে পড়ে বলে বিভিন্ন সময় তারা বিবৃতি দিয়ে আসছে। সরকারের কাছেও সংস্থাগুলো শরণার্থী ক্যাম্পে ইন্টারনেট পরিসেবা চালু করার দাবি জানায়।

এ ছাড়া শরণার্থী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা কমিউনিটির পক্ষ থেকেও ইন্টারনেট সেবা চালুর দাবি জানানো হয়।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার যুগ্মসচিব মাহবুব আলম তালুকদার জানিয়েছেন, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার দাবি ছিল শরণার্থী ক্যাম্পে ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করার। স্থানীয় প্রশাসন এবং প্রত্যাবাসন অফিসের আপত্তি না থাকায় সরকার শরণার্থী ক্যাম্পে ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করেছে। তবে এই ইন্টারনেট পরিসেবা নিয়ে ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে কোনো সমস্যা না হয় সে দিকে কঠোর নজরদারী রাখা হবে।

উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা মাস্টার আবদুর রহিম জানিয়েছেন, আজ সকাল থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাচ্ছে, তবে খুবই দুর্বল নেটওয়ার্ক। তিনি আবারও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইন্টারনেট সেবা চালু করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইন্টারনেট, ক্যাম্পে, রোহিঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন