রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হঠাৎ 4G, ৩ ঘন্টা পর উধাও

fec-image

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে পুরো দেশে যখন অচলাবস্থা। ঠিক তখনই কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চালু হয় নেটওয়ার্ক কোম্পানী ফোরজি সেবা। হঠাৎ ফোরজি নেট দেখে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এলাকার লোকজনের মাঝে দেখা যায় আতংক ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রবি, এয়ারটেল, টেলিটকের ফোরজি সেবা চালু হলেও সাড়ে ১১টার দিকে উধাও হয়ে যায়। ৩ঘন্টার বেশি স্থায়ী ছিলনা বলে এ পার্বত্যনিউজকে জানিয়েছেন অনেকে।

বালুখালী কাস্টমস রোহিঙ্গা ক্যাম্প অধ্যূষিত এলাকায় বসবাসকৃত গণমাধ্যমকর্মী শ.ম গফুর জানায়, সকাল ১০টার দিকে কাস্টমস এলাকায় কয়েকজন যুবক জড়ো হয়ে মোবাইলে নেট দেখছিল, তখন সে তাদের নিকট জানতে চাইলে তারা ফোরজি চালু হওয়ার কথা বলে। পরে তার মোবাইলে নেট চালু করলে রবি’তে ফোরজি পাওয়া যায় বলে সত্যতা নিশ্চিত করেন। কুতুপালং এলাকার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সকাল ৯টার দিকে সে মোবাইল চালু করলে রবি’ সিমে ফোরজি নেট দেখতে পান। সাড়ে ১১টার পর থেকে আর ফোর-জি নেট পাওয়া যাচ্ছেনা। গ্রামীণফোন অথবা বাংলালিংক নেট’এর বিষয়টি সে অবগত নয় বলে জানান।

পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী ফোরজি নেট চালু হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন, দীর্ঘদিন আমরা থ্রি-জি, ফোর-জি সেবা থেকে বঞ্চিত। রোহিঙ্গাদের কারণে আমরা কেন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবো?

এসময় তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থ্রি-জি, ফোর-জি সেবা যেন চালু করা না হয়, কারণ রোহিঙ্গারা এ সেবার মাধ্যমে দেশের তথ্য বিদেশে পাচার করে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে থাকে। তাই এই নেট সুবিধা বন্ধ থাকায় অনেকাংশে রোহিঙ্গাদের অপতৎপরতা কমিয়ে এসেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

হঠাৎ ক্যাম্পে ফোর-জি চালু হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহাবুবুল আলম তালুকদার (জেষ্ঠ্য যুগ্ন সচিব) পার্বত্য নিউজকে বলেন, আমিও লোকজনের নিকট থেকে শুনেছি। তবে কনফার্ম না হয়ে বলতে পারছিনা। আমি এ বিষয়ে খোঁজ খরব নিয়ে বিস্তারিত পরে জানাব।

এবিষয়ে নেটওয়ার্ক কোম্পানী কোন কর্মকর্তা সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় থ্রি-জি, ফোর-জি সেবা চালু হলে আমরা স্থানীয়রা সব চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়ব। কারণ রোহিঙ্গারা স্যোশাল মিডিয়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে বড় আকারে গুজব ছড়িয়ে স্থানীয়দের উপর হামলা চালায়। তাছাড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুহুর্তের মধ্যে সারাবিশ্বে পাচার করে দিয়ে বিদেশের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে থাকে।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের মোবাইল সুবিধা বন্ধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে গত ১ সেপ্টেম্বর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিকে নির্দেশ দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও তৎসংলগ্ন এলাকায় থ্রি-জি ও ফোর-জি সেবা বন্ধ করে দেন বিটিআরসি। সেই থেকে শুধুমাত্র ভয়েস কল সুবিধা সব সেবা বন্ধ হয়ে যায়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন