আলীকদমে রোহিঙ্গা নারীর মামলার দায় থেকে ৫ আলেম খালাস

fec-image

বান্দরবানের আলীকদমে রোহিঙ্গা নারীর দায়ের করা মিথ্যা মামলার অভিযোগের দায় থেকে ৫ জন আলেমকে অব্যাহতি দিয়েছেন বান্দরবানের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ফয়জয়ুল উলুম মাদ্রাসার বার্ষিক সভা স্থগিত করে দিয়েছিল পুলিশ। এনিয়ে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, আহমদ শরীফ নামে এক রোহিঙ্গা নাগরিক স্বপরিবারে আলীকদম বাস টার্মিনাল এলাকার ঠাণ্ডা মিস্ত্রি পাড়ায় প্রায় দশবছর আগে থেকে বসবাস করতে থাকে। পরবর্তীতে জমি কিনে দানু সর্দার পাড়ায় বাড়িও নির্মাণ করে। এলাকায় পানি সংকট থাকায় পরিবারটি স্থানীয় ফয়জুল উলুম মাদ্রাসা থেকে পানি সংগ্রহ করতো।

গত ২৪ এপ্রিল মাদ্রাসাটির সভা থাকায় কর্তৃপক্ষ উক্ত দুইদিন পানি না নিতে অনুরোধ জানান। কিন্তু তা অমান্য করে রোহিঙ্গা নারী ছলেমা খাতুন পানি নিতে গেলে বাঁধে বিপত্তি। এর জের ধরে রোহিঙ্গা ছলেমা খাতুন, তার ছেলে মো. আলমসহ তাদের পরিবারের লোকজন মাদ্রাসা পরিচালক মাওলানা শামশুল হুদা সিদ্দিকীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং পরণের কাপড় ধরে টানাটানি করে। অন্যান্য শিক্ষকরা এসব রোহিঙ্গাদের নিবৃত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।

এ ঘটনায় মাদ্রাসা বিরোধি স্থানীয় একটি মহলের ইন্ধনে রোহিঙ্গা নারী ছলেমা বাদী হয়ে মাদ্রাসা পরিচালকসহ আরও ৪ জনের বিরুদ্ধে আলীকদম থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ৫ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ১০ ধারায় এবং দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩০৭/৫০৬ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে।

গত ৭ অক্টোবর বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ মামলার শুনানীতে বলেন, ‘এজাহারে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনয়ন করা হয়েছে। যৌন কামনা চরিতার্থ কিংবা যৌন নিপীড়নের অভিযোগ নেই। এমতাবস্থায় নথি ও দাখিলী কাগজপত্রাদি পর্যালোচনায় অত্রাদালতের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, আসামীদের বিরুদ্ধে সুনিদির্ষ্ট অভিযোগ নেই। এমতাবস্থায় অত্র মামলার আসামি মাওলানা শামশুল হুদা সিদ্দিকী এর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর বিরুদ্ধে ১০ ধারায় এবং উক্ত আসামীসহ অর্থাৎ মাওলানা শামশুল হুদা সিদ্দিকী, মাহমুদুল করিম, আলমগীর জলিল, হাফেজ শিব্বির আহাম্মদ, আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৯৬৯ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নেই মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় আসামীদের মামলায় আনীত অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।

উল্লেখ্য, স্থানীয় কতিপয় জনপ্রতিনিধি ও তথ্য সংগ্রহকারী দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের সহযোগিতায় আলীকদমে অনেক রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়ে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব রোহিঙ্গা নাগরিক এলাকার শান্তি-স্থিতিশীলতার জন্য ক্রমশ হুমকী হয়ে উঠেছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আদালত, আলীকদমে, মামলার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন